× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সচল বুয়েট

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, শনিবার

প্রকৌশল বিদ্যার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বদ্যিালয় (বুয়েট)। মেধাবীদের এই প্রতিষ্ঠানটি অচলাবস্থায় ছিল টানা ২ মাস। দীর্ঘ অচলাবস্থা কাটিয়ে এখন স্বাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। এমাসের ২৮ তারিখ থেকে তাদের টার্ম ফাইনাল। আর বর্তমানে ক্যাম্পাসে ‘ইনভিজিবল’ অবস্থায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী। ৬ই অক্টোবর নির্মম এই ঘটনার পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মুখে শিক্ষার্থীদের দেয়া ১০ দফা দাবির সবগুলোই মেনে নেয় প্রশাসন। বুয়েটে নিষিদ্ধ হয়েছে সব ধরনের রাজনীতি। আবরার হত্যায় দোষীদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও পূর্বের র‌্যাগিংয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির সম্মুখীন হয়েছেন। আবার রাজনীতি ও র‌্যাগিংয়ের সঙ্গে পুনরায় জড়িত হলে রাখা হয়েছে শাস্তির বিধান।
শিক্ষার্থীরা অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করে নেন তাদের সকল চাওয়া। ৪ঠা ডিসেম্বর তারা আন্দোলনের সমাপ্তি টেনে ঘোষণা দেন একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরে যাবার। গতকাল বুয়েট ক্যাম্পাসে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, সুনশান নীরবতা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। ক্লাস রুমগুলো ফাঁকা। হলগুলোতে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিতুমীর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মীর আহসান কবির বলেন, হলগুলোতে এখন আগের মতো ভীতিকর কোন পরিস্থিতি নেই। আগে বড় ভাইদের কিংবা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কারণে সবসময় ভীতি নিয়ে চলতে হতো। আর বর্তমানে ছাত্রলীগের (সাবেক) নেতাকর্মীরাই হলগুলোতে ইনভিজবল অবস্থায় রয়েছে। অধিকাংশই হলে থাকছেন না। আর যারা থাকছেন তারা নীরবেই রয়েছেন।
আহসান উল্লাহ হলের শিক্ষার্র্থী জোবায়দুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আমি ৩ বছর ধরে এই হলে থাকি। হলের এমন শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি যেন স্বপ্ন ছিলো। বড় ভাই ডাকবে, সেই ভয় নাই। অবাধে চলাফেরা করতে পারছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের এক কর্মী বলেন, আপনার হাতে কাচি থাকলে আপনি চাইবেন কিছু কাটতে। কিছু না পেলে অযথা কাগজ কাটা শুরু করবেন। আমরা ক্যাম্পাসে এসেই ক্ষমতার সন্ধানে চলে যাই। যাক এখন ক্যাম্পাসে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে আমরা খুশি। তিনি বলেন, আমাদের যেন বোধ ফিরেছে। ছোট ভাইদের সঙ্গে যে আচরণ করেছি, এখন অনুশোচনা হয়। তার সঙ্গে থাকা আরেকজন বলেন, হলে থাকতে খানিকটা লজ্জাই লাগে। সেইসঙ্গে যেন ভীত হয়েও আছি। আমরা তাদের সঙ্গে অনেক সময় একটু বাড়াবাড়িই করেছি। এখন হলে থাকতে অস্বস্তি হচ্ছে। তাই পারতপক্ষে হলে না থাকার চেষ্টা করি। আর হলে থাকলেও নিজেকে গুটিয়ে রাখি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র অন্তরা মাধুরী তিথি বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আমাদের আন্দোলন ছিলো। আমাদের সকল যৌক্তিক দাবি প্রশাসন মেনে নিয়েছেন বলেই আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে গেছি। এই পরিবশে বিরাজ থাক এটাই আমাদের চাওয়া। বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যথাসাধ্য এবং দ্রুততার সঙ্গে পুরণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমারও শিক্ষার্থীদের মতো নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছি সঙ্গে স্বাগতও জানাই। আর চাই না আবরারের মতো ঘটনা ঘটুক। কোন মায়ের কোল ফাঁকা হোক। ক্যাম্পাসের এই শান্তিপূর্ণ অবস্থা ধরে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর