এক্সক্লুসিভ
সহসাই ফেরানো যাচ্ছে না শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে
শুভ্র দেব
২০২০-০১-১৪
দুবাই পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে সহসাই দেশে ফেরানো যাচ্ছে না। তাকে কখন ফেরানো যাবে বা আদৌ ফেরানো যাবে কিনা এ নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। তবে একাধিক সূত্র বলছে, আইনি জটিলতা থাকায় এখনই তাকে ফেরানো সম্ভব হবে না। কারণ বাংলাদেশ ছাড়াও জিসানের ভারত, দুবাই, জার্মানির নাগরিকত্ব রয়েছে। সে এসব দেশের পাসপোর্টও ব্যবহার করতো। এছাড়া ভারত ও থাইল্যান্ড ছাড়া আর কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি নাই। তারপরও দুবাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট বা এমএলএর মাধ্যমে জিসানকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে জিসানকে ফিরিয়ে আনার জন্য এনসিবি ঢাকা (ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ব্যুরো) ও এনসিবি দুবাইয়ের মধ্য কয়েক দফা চিঠি চালাচালি হয়েছে। দুবাই এনসিবির চাহিদা অনুসারে ঢাকা থেকে জিসানের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তথ্য, মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র দুবাই এনসিবিকে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এনসিবি ঢাকা সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে বিদেশে বসে জিসান ঢাকার অপরাধ জগতকে নিয়ন্ত্রণ করছিলো। চাঁদাবাজি, খুনখারাবিসহ নানা অপরাধে ছিল তার সম্পৃক্ততা। দেশের বাইরে তার অবস্থান থাকায় আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই তার অপকর্মের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে যোগাযোগ করা হয় দুবাই এনসিবির সঙ্গে। জিসানের পাসপোর্ট ও আপডেট ছবি পাঠিয়ে দুবাই এনসিবিকে খোঁজ খবর নিতে বলা হয়েছিলো। পরে তারা জিসানকে শনাক্ত করে জানায় ব্যক্তি একই হলেও তার নাম জিসান নয় আলি আকবর। সে ভারত এবং ডমিনিক্যাল রিপাবলিকের পাসপোর্ট ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ২রা অক্টোবর দুবাই এনসিবি তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তাকে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে রাখা হয়েছে।
সন্ত্রাসী জিসানের জন্ম কুমিল্লায় হলেও বড় হয়েছে রাজধানীর খিলগাঁও-রামপুরায়। ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে উঠে। ১৯৯৮ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়ে। ওই সময় আরেক সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গিরের সঙ্গে তাদের বিরোধ দেখা দেয়। ২০০১ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে তাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। ওই তালিকায় জিসানের নাম ছিল। ২০০৩ সালে মালিবাগের একটি হোটেলে জিসানকে আটক করার জন্য অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। জিসান অভিযানিক টিমের ওপর গুলি চালালে ডিবির দুই কর্মকর্তা নিহত হন। ওই দুই ডিবি কর্মকর্তাকে হত্যার পরেই জোরেশোরে আলোচনায় আসে জিসান। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য রাত-দিন অভিযান চালায়। অভিযানের মুখে ২০০৫ সালে জিসান গাঁ ঢাকা দিয়ে পালিয়ে যায় ভারতে। পরে সেখানে বসেই ঢাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার করে। নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৯ সালে সে কলকাতা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে তার নাম পরিবর্তন করে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করে চলে যায় দুবাইতে। সেখানে বসেই ঢাকার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতো। ভারতের পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে জার্মানিতে বসবাসের সুযোগ পায়। এরপর সে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়াতো।
সূত্র জানায়, বিদেশে বসে জিসান রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করত। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা এমনকি বেশ কিছু হত্যাকান্ডেও তার সম্পৃক্ততা আছে। ইন্টারপোলের রেড এলার্টে জিসানের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। হত্যা ও বিস্ফোরক বহনসহ নানা অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। গত বছর ঢাকায় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে জিসানের দুই সহযোগী জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর ফের আলোচনায় আসে জিসানের নাম। একাধিকসূত্র নিশ্চিত করেছে খালেদ ও শামীমের সমস্ত অপকর্মের শেল্টার দিত জিসান। বিনিময়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে টাকার ভাগ পাঠিয়ে দিতেন তারা। ঢাকায় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের সঙ্গে জিসানের যোগসূত্র ছিল। এছাড়া দুবাইতে জিসান দুটি রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার পাশপাশি, স্বর্নের দোকান, গাড়ির শো-রুম ও নাইট ক্লাবের ব্যবসা করতো। এসব ব্যবসা দেখভাল করতেন তার ছোট ভাই শামীম ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাকিল মাজহার। মাজহার সূত্রাপুর যুবলীগের সহসম্পাদক রাজিব হত্যা মামলার আসামি।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি সোহেল রানা বলেন, দুবাইতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে এনসিবি ঢাকা। দুবাই এনসিবি জিসান রিলেটেড বেশকিছু কাগজপত্র চেয়েছিল। এনসিবি ঢাকা সেগুলো সংগ্রহ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে তারা ডকুমেন্টসগুলো দুবাই পাঠিয়েছে কিনা সেটা জানাতে পারেননি দায়িত্বশীল এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এনসিবি ঢাকা সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে বিদেশে বসে জিসান ঢাকার অপরাধ জগতকে নিয়ন্ত্রণ করছিলো। চাঁদাবাজি, খুনখারাবিসহ নানা অপরাধে ছিল তার সম্পৃক্ততা। দেশের বাইরে তার অবস্থান থাকায় আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই তার অপকর্মের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে যোগাযোগ করা হয় দুবাই এনসিবির সঙ্গে। জিসানের পাসপোর্ট ও আপডেট ছবি পাঠিয়ে দুবাই এনসিবিকে খোঁজ খবর নিতে বলা হয়েছিলো। পরে তারা জিসানকে শনাক্ত করে জানায় ব্যক্তি একই হলেও তার নাম জিসান নয় আলি আকবর। সে ভারত এবং ডমিনিক্যাল রিপাবলিকের পাসপোর্ট ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ২রা অক্টোবর দুবাই এনসিবি তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তাকে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে রাখা হয়েছে।
সন্ত্রাসী জিসানের জন্ম কুমিল্লায় হলেও বড় হয়েছে রাজধানীর খিলগাঁও-রামপুরায়। ছোটখাটো মাস্তানি করতে করতে শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে উঠে। ১৯৯৮ সালের দিকে খিলগাঁও এলাকার সন্ত্রাসী আসিফের সঙ্গে মিশে খুনখারাবিতে জড়িয়ে পড়ে। ওই সময় আরেক সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গিরের সঙ্গে তাদের বিরোধ দেখা দেয়। ২০০১ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে তাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। ওই তালিকায় জিসানের নাম ছিল। ২০০৩ সালে মালিবাগের একটি হোটেলে জিসানকে আটক করার জন্য অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। জিসান অভিযানিক টিমের ওপর গুলি চালালে ডিবির দুই কর্মকর্তা নিহত হন। ওই দুই ডিবি কর্মকর্তাকে হত্যার পরেই জোরেশোরে আলোচনায় আসে জিসান। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য রাত-দিন অভিযান চালায়। অভিযানের মুখে ২০০৫ সালে জিসান গাঁ ঢাকা দিয়ে পালিয়ে যায় ভারতে। পরে সেখানে বসেই ঢাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার করে। নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৯ সালে সে কলকাতা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে তার নাম পরিবর্তন করে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করে চলে যায় দুবাইতে। সেখানে বসেই ঢাকার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতো। ভারতের পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে জার্মানিতে বসবাসের সুযোগ পায়। এরপর সে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়াতো।
সূত্র জানায়, বিদেশে বসে জিসান রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করত। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা এমনকি বেশ কিছু হত্যাকান্ডেও তার সম্পৃক্ততা আছে। ইন্টারপোলের রেড এলার্টে জিসানের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। হত্যা ও বিস্ফোরক বহনসহ নানা অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। গত বছর ঢাকায় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে জিসানের দুই সহযোগী জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর ফের আলোচনায় আসে জিসানের নাম। একাধিকসূত্র নিশ্চিত করেছে খালেদ ও শামীমের সমস্ত অপকর্মের শেল্টার দিত জিসান। বিনিময়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি থেকে টাকার ভাগ পাঠিয়ে দিতেন তারা। ঢাকায় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের সঙ্গে জিসানের যোগসূত্র ছিল। এছাড়া দুবাইতে জিসান দুটি রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার পাশপাশি, স্বর্নের দোকান, গাড়ির শো-রুম ও নাইট ক্লাবের ব্যবসা করতো। এসব ব্যবসা দেখভাল করতেন তার ছোট ভাই শামীম ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাকিল মাজহার। মাজহার সূত্রাপুর যুবলীগের সহসম্পাদক রাজিব হত্যা মামলার আসামি।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি সোহেল রানা বলেন, দুবাইতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে এনসিবি ঢাকা। দুবাই এনসিবি জিসান রিলেটেড বেশকিছু কাগজপত্র চেয়েছিল। এনসিবি ঢাকা সেগুলো সংগ্রহ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে তারা ডকুমেন্টসগুলো দুবাই পাঠিয়েছে কিনা সেটা জানাতে পারেননি দায়িত্বশীল এই পুলিশ কর্মকর্তা।