শেষের পাতা

শ্রীমঙ্গলে স্কুলছাত্র রকি হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

২০২০-০১-১৬

শ্রীমঙ্গল শহরের বধ্যভূমির পাশের চা বাগান থেকে উদ্ধার করা স্কুলছাত্র ইব্রাহিম মিয়া রকি হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গ্রেপ্তারকৃত দুই কিশোর সাব্বির ও ফায়সাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এর মধ্যে সাব্বির শহরতলীর পশ্চিম খাসগাঁও আবুল মিয়ার ছেলে ও ফায়সাল একই গ্রামের বাসিন্দা মোখলেছ মিয়ার ছেলে।
লাশের সঙ্গে থাকা চাদর ব্যবহারকারী এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা হয় বলে জানান শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান। গতকাল সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল থানায় এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গবার শহরের স্টেশন রোড এলাকা থেকে সাব্বির মিয়া (১৭) এবং খাসগাঁও থেকে ফয়সাল মিয়া (১৭)কে আটক করা হয়। দুজনই কিশোর। রাতে থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা রকি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে, স্কুলছাত্র ইব্রাহিম মিয়া রকির সাথে সাব্বির মিয়ার বন্ধুত্ব ছিল। গত এক আগে ইব্রাহিম ও সাব্বিরের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে ঝগড়া হয়। তখন রকি সাব্বিরের গালে চরথাপ্পড় মারে। এরপর হতে সাব্বির প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রকিকে সুযোগ খুঁজতে থাকে। প্রায় একমাস যাবত তাদের দু’জনের মধ্যে কোন যোগাযোগও ছিল না।

গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইব্রাহিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সাব্বির। সে অনুযায়ী সাব্বির তার আরেক বন্ধু ফয়সালকে সাথে নিয়ে শ্রীমঙ্গল স্টেশন রোডে একত্রিত হয়। রাত অনুমান সাড়ে ৮টায় সাব্বির খুন হওয়া ইব্রাহিম মিয়া ওরফে রকিকে ফোন দিয়ে জানায়, এক অনুষ্ঠানে যেতে সে রেলগেটে আছে। ইব্রাহিম তাদের কথা মতো সাব্বির ও ফয়সালের সাথে শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোডের রেল গেট এলাকায় গিয়ে একত্র হয়। সেখান থেকে অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে উপজেলার দক্ষিণ ভাড়াউড়া ভুরবুড়িয়া চা-বাগানে নিয়ে সাব্বির তার বন্ধু রকি’র মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। এসময় ফয়সাল রকি’র হাতে ধরে সাব্বির তার মুখে স্কচটেপ দিয়ে মুখে ও গলায় পেঁচিয়ে প্রায় ১০ মিনিট রকির গলায় হাত দিয়ে চেপে ধরে বুকের উপরে বসে থাকে। তখন ফয়সালও রকির পা চেপে ধরে রাখে। রকি নিস্তেজ হওয়ার পর তারা দুজন মিলে রকির জ্যাকেটের সাহায্যে টেনে অনুমান ৭/৮ হাত দূরে অবস্থিত কড়ই গাছের সঙ্গে সাব্বির কালো রঙের চাদর দুভাগ করে এবং ভিকটিমের পরহিত প্যান্টের বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে তারা দুজনে বাড়িতে চলে আসে। এ ঘটনায় রকির মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে শ্রীমঙ্গল থানার মামলা হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, এ হত্যাকান্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্লু উদঘাটন করতে পেরেছি। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে রেকর্ড করার পর আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ওসি বলেন, খুন হওয়া কিশোর ইব্রাহিম মিয়া রকি স্থানীয় ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র ছিলো। তার পিতা মাংস ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া। তারা শহরের ১০ নম্বর জালালিয়া সড়কে বসবাস করতো।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status