রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর অভিযোগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) দায়ের করা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়া হবে ২৩শে জানুয়ারি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা আইসিজে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে ওইদিন। এর আগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জরুরি
ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে ওই আদালতে মামলা করেছিল আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। সে বিষয়ে রায় দেবেন আদালতটির বিজ্ঞ বিচারকরা। আল-জাজিরা জানিয়েছে, গাম্বিয়ার আইন মন্ত্রণালয় সোমবার টুইটে ওই আদেশ দেয়ার কথা জানিয়েছে। তবে আইসিজে এখনো তারিখ উল্লেখ করে কোনো ঘোষণা দেয়নি। মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির পক্ষে নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া।
তাতে অভিযোগ করা হয়, সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অব্যাহত গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। এ অভিযোগের শুনানিতে হেগে অবস্থিত আদালতে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পক্ষ না নিয়ে, নির্যাতনকারী সেনাবাহিনীর পক্ষ নেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত অং সান সুচি। তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গান।
মিয়ানমারে গণহত্যা হয়নি বলে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। উল্টো বলেন, মিয়ানমারের ওই পরিস্থিতিতে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। এতে বিস্মিত হয় বিশ্ব। গাম্বিয়ার অভিযোগ সেনা অভিযানের মাধ্যমে দেশ থেকে কমপক্ষে ৭ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করে মিয়ানমার ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। তাই আইনি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আর যাতে কোনো ক্ষতি না হয় এ জন্য প্রয়োজনীয় বা অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিতে আইসিজের প্রতি আহ্বান জানায় গাম্বিয়া।
গাম্বিয়া আরো বলে, রাখাইনে এখনো বড় ধরণের গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই মিয়ানমারকে আটকাতে ও পূর্বের গণহত্যার প্রমাণ লোপাট বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে দেশটি। তবে এখনো এটি নিশ্চিত নয় যে এই জরুরি ব্যবস্থা মিয়ানমারকে কতখানি চাপে ফেলবে। তাছাড়া, এটি কার্যকর করাও বেশ কঠিন হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
রাখাইন রাজ্যে এখনো প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।