টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের নয়াপাড়া নারাঙ্গাইল সড়কটি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ। গ্রামবাসী তাদের চলাচলের অনুপযোগী নয়াপাড়া-নারাঙ্গাইল রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘদিন ধরে জোর দাবি জানিয়ে আসলেও ভাগ্যাহত এসব গ্রামবাসীর ভাগ্যে জুটেনি রাস্তাটি সংস্কার বা সম্প্রসারণের কাজ। এখন পর্যন্ত এর কোনো বিধিব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এইসব গ্রামের বাসিন্দারা। সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রতিদিন দুই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে নয়াপাড়া পৌঁছে হামিদপুর বাজার এবং উপজেলার সদরে যাতায়াত করেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণে কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে নেয়ার আগেই বাড়িতেই তাকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করতে হয়। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চা ও গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে এমন দুর্ভোগ প্রায়ই দেখা দেয়।
তা ছাড়া এ গ্রামে কোনো কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। একটু বৃষ্টিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়ায় কোনো রিকশা ভ্যান চলাচল করতে পারে না। এমনকি ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনার জন্য একমাত্র স্কুলটিতেও যাতায়াতের জন্য অসুবিধা হয়। নারাঙ্গাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মসজিদ রয়েছে। সম্প্রতি নয়াপাড়া নারাঙ্গাইল রাস্তার ধারে একটি ছোট বাজার বসিয়েছে গ্রামবাসী। প্রতিদিন দুই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে শিক্ষক শিক্ষার্থী নারাঙ্গাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছে। এ বিদ্যালয়ে তাদের স্থানীয় ও জাতীয় সরকার গঠনের ভোট কেন্দ্রও রয়েছে। ভোট কেন্দ্রে মালামাল আনা নেয়াসহ নানা রকম কাজ করতে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। এলাকা ঘুরে ও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নয়াপাড়া থেকে ইদ্রিসের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকাকরণ করে তাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব করার জন্য সরকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে। এই গ্রামের মাতব্বর জনৈক আবুল কাশেম বলেন, আমরা সত্যি খুব অবহেলিত। যুগের পর যুগ ধরে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব নাজুক। কেউ দেখার নেই। রাস্তার এ করুণ অবস্থার কারণে গ্রামের জনগণের দুর্ভোগ চরম পর্যায় এসে দাঁড়িয়েছে। সমাজসেবক আবুল হোসেন জানায়, গ্রামের অসুস্থ রোগীরা তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে নয়াপাড়া গিয়ে অটোভ্যান নিয়ে উপজেলা সদর কিংবা পার্শ্ববর্তী কালিহাতী সদরে চিকিৎসাসেবা নিতে যেতে হয়। আমরা এ কষ্টকর অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আবদুর রাজ্জাক নামে গ্রামের এক শিক্ষানুরাগী বলেন, নয়াপাড়া নারাঙ্গাইল কাঁচা সড়কটি পাকাকরণ খুবই জরুরি। এখানে নারাঙ্গাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গ্রামের দুটি মসজিদ অবস্থিত। গ্রামবাসী রাস্তাটির পাশে একটি নতুন বাজার বসিয়েছে। নানাবিধ কারণে সরকার আমাদের দিকে নজর দিতে পারছে না বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে দিগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মামুন জানান, আমরা রাস্তাটির জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানিয়েছি। দ্রুত রাস্তাটি ঠিক করার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।