সাভারে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে কারখানায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকালে চার যুবককে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত পরিচয় ৬০-৭০ জনের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন ক্ষতিগ্রস্ত রাকেফ অ্যাপারেলস কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক শাকিল মাহমুদ। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেল (১৮), লালমনিরহাটের ইয়াছিন (২১), ফরিদপুরের সিয়াম (১৬) ও সৈয়দপুরের মিলন (২২)। মামলার বাদী রাকেফ অ্যাপারেলস কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক শাকিল মাহমুদ বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করে কাখানায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটনায়। এতে কারখানার মূল ফটক, ভেতরের বিভিন্ন অফিসের গ্লাস, আসবাবপত্র, কম্পিউটার ও মেশিনারিজসহ প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় কারখানার মালিক-শ্রমিকসহ সকলের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের কারখানার প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের এক মাসের বেতন দেয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার।
কিন্তু ব্যাংকের জটিলতার কারণে আমরা বেতন দিতে না পারায় শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে বহিরাগত লোকজন শ্রমিক অসন্তোষের সুযোগ নিয়ে কারখানায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী শ্রমিকদের উসকে দিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষকে চাপে ফেলে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে। তবে শ্রমিকদের বকেয়া পাওয়ানাদি আগামী ২২শে জানুয়ারি পরিশোধ করা হবে বলেও জানান তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, পোশাক কারখানায় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ভাঙচুরের সময় গ্রেপ্তার চার বহিরাগত যুবককে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কারখানাটির সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় অবস্থিত রাকেফ অ্যাপারেলস কারখানার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে রাত ৭টার দিকে তারা হেমায়েতপুর-সিংগাইর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখে। এ সময় তারা বেশকিছু যানবাহনসহ কারখানার ভেতরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করলে এবং ভাঙচুরে বাধা প্রদান করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।