অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর্দা উঠেছে গতকাল। আর আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামছে বাংলাদেশের যুবারা। পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ হৃদয়-শরীফুলদের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। এবারের আসরে খেলছে ১৬টি দল। এদের মধ্যে অভিজ্ঞতা আর জয়ের শতকরা হারের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। দলে বেশ কয়েকজন ম্যাচ উইনার রয়েছেন। ক্রিকেটের জনপ্রিয় পোর্টাল ইএসপিএন ক্রিকইনফো গতকাল ১১ জন খেলোয়াড়ের তালিকা প্রকাশ করে, যারা এবারের আসরে আলো ছড়াতে পারেন। সেই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয় ও পেসার শরীফুল ইসলাম।
বাকিরা হলেন ভারতের তিলক বার্মা-কার্তিক ত্যাগী, আরব আমিরাতের বৃত্ত অরবিন্দ, ইংল্যান্ডের জর্ডান কক্স, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকেঞ্জি হার্ভি, দক্ষিণ আফ্রিকার জনাথন বার্ড, জিম্বাবুয়ের ডেন শাডেনডর্ফ, নিউজিল্যান্ডের আদিত্য অশোক ও স্কটল্যান্ডের চার্লি পিট।
বাংলাদেশকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তৌহিদ হৃদয়। আসরে অধিনায়ক আকবর আলীর ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হৃদয়। ২০১৮-১৯ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ৫৫ গড়ে রান করেন এ ডানহাতি। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত যুব বিশ্বকাপের গত আসরে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার। ব্যাট হাতে নিজের শেষ ৯ ইনিংসে হৃদয় খেলেন ৫১*, ৭৩, ৮, ৮২*, ১২৩*, ১১৫, ১১১, ৫৩ ও ৩৬ রানের ইনিংস।
বল হাতে বাংলাদেশের সেরা তারকা বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম। গত বছর লিঙ্কনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে আলোচনায় আসেন শরীফুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত সপ্তাহে প্রস্তুতি ম্যাচে তার শিকার ৪ উইকেট। ৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে শরীফুলের বোলিং গড় ২২.৫০। আর ২৬ লিস্ট-এ ম্যাচে ২৪.৯৩ গড়ে নিয়েছেন ৪৬ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার পেস সহায়ক কন্ডিশনে শরীফুল হতে পারেন বাংলাদেশের তুরুপের তাস।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ হৃদয়-শরীফুলদের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। মূল লড়াইয়ে নামার আগে প্রস্তুতি ম্যাচে মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে যুবাদের। দারুণ লড়াইয়ে ২৫০ রানের পুঁজি নিয়ে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টাই করার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১১৩ রানে গুটিয়ে যায় আকবর আলীর দল। বোলারদের নৈপুণ্যে এক সময় কিইউদের ৬০ রানে ৬ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত হার এড়ানো সম্ভব হয়নি। জিম্বাবুয়ে সহজ প্রতিপক্ষ নয়। প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের সঙ্গে লড়াই করে হারে তারা। ভারতের ২৯৫ রানের জবাবে ২৭২ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ডেন শাডেনডর্ফ ৭৪ বলে করেন ৮১ রান।
যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কখনো ফাইনালে খেলতে পারেনি। ২০১৬’র আসরে ঘরের মাঠে তৃতীয় হওয়াই তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য। তবে দেশ ছাড়ার আগে আকবর আলী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভালো কিছুর। আর বাংলাদেশকে ফেভারিট ভাবছেন বোদ্ধা-বিশ্লেষকরাও। তবে বাংলাদেশের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারত। আসরে সর্বাধিক চারবারের শিরোপা জয়ী দল তারা। গত চার আসরে দুবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার্সআপ হয়েছে ভারত। দুবার করে রানার্সআপ হয়েছে পাকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়া। আর দক্ষিণ আফ্রিকা-উইন্ডিজ একবার করে শিরোপা জিতেছে। শিরোপা দৌড় থেকে বাদ দেয়া যাচ্ছে না আফগানিস্তানকেও। গতকাল উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ১২৯ রানে গুঁড়িয়ে দেয় আফগানরা।
‘সি’ গ্রুপে জিম্বাবুয়ে ছাড়া বাংলাদেশের বাকি তিন প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ড। ২১শে জানুয়ারি স্কটল্যান্ড ও ২৪শে জানুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবেন হৃদয়-শরীফুলরা।