× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জাতীয় অ্যাথলেটিকসে ট্র্যাক ও মাঠের এ কী হাল! /গর্তে পড়ে পা ভেঙেছেন অ্যাথলেটরা

খেলা

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
১৮ জানুয়ারি ২০২০, শনিবার
পা ভেঙে হাসপাতালে যান হাইজাম্পার আরিফুজ্জামান

চট্টগ্রামে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ৪৩তম জাতীয় অ্যাথলেটিকস শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার । দীর্ঘ ১৪ বছর পর ঢাকার বাইরে বসেছে অ্যাথলেটিক্সের জাতীয় আসর। তবে এ নিয়ে উৎসাহ নেই কারো মাঝে। স্টেডিয়াম লাগোয়া চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার দেয়ালে টাঙানো একটি ব্যানারেই অ্যাথলেটিকসের প্রচারণা সীমাবদ্ধ। অথচ ঢাকার বাইরে জাতীয় এ আসর বসানোর বড় উদ্দেশ্য খেলার প্রতি খেলোয়াড় ও সাধারণ মানুষের উৎসাহ বাড়ানো। সেটা যে একেবারে দায়সারা, তা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। ট্র্যাকের কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কোথাও ঘাস নেই।
কোনোরকমে মাটি ফেলে মাঠ সমান করা হয়েছে। তবু ঢিবির মতো হয়ে গেছে মাঠ।
উঁচু-নিচু, পরিচর্যাহীন এই মাঠে হাইজামপ দেয়ার সময় গর্তে পড়ে পা ভেঙেছেন বিজেএমসির অ্যাথলেট আরিফুজ্জামান। দৌড়াতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে হাঁটুতে গুরুতর চোট পেয়েছেন বিজেএমসির অ্যাথলেট মমতাজ নাসরিন।
এর মধ্যেও উদ্বোধনী দিনে ১০ দশমিক ৪০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১০০ মিটার অতিক্রম করে সোনা জিতেছেন ইসমাইল হোসেন। আর ১২ দশমিক ১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে মেয়েদের ১০০ মিটার সিপ্রন্টে সোনা জিতেছেন পুরনো মুখ শিরিন আক্তার। অচেনা মাঠে ১০০ মিটার সিপ্রন্টে বর্তমান দ্রুততম মানব হাসান মিয়াকে পেছনে ফেলে মুকুট নিজের করে নেন নৌবাহিনীর অ্যাথলেট ইসমাইল হোসেন। ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট জাতীয় অ্যাথলেটিকসে হাসান মিয়া সময় নিয়েছিলেন ১০ দশমিক ৬১ সেকেন্ড।
প্রথম দিনে মোট ১০টি ইভেন্টের নিষ্পত্তি হয়। ৬টি স্বর্ণ, ৪টি রৌপ্য এবং ৪টি ব্রোঞ্জ সহ মোট ১৪টি পদক নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। ৩টি স্বর্ণ, ৫টি রৌপ্য এবং ৪টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১২ পদক নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ সেনাবিাহিনী। ১টি স্বর্ণ ও ১টি রৌপ্য মোট ২টি পদকে তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি।
তিন দিনব্যাপী প্রতিযোগিতায় ৩৬টি ইভেন্টের জন্য ৩৩টি দলের ৩৭৫জন এ্যাথলেট অংশগ্রহণ করছেন। এর মধ্যে পুরুষ এ্যাথলেট ২৮৭জন, মহিলা এ্যাথলেট ৮৮ জন। প্রতিযোগিতা পরিচালনার জন্য দেশের বরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক, সাবেক জাতীয় খেলোয়াড়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রায় ১৫০জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব বিচারক হিসেবে কাজ করছেন।
৪৩তম জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতার কো-চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। অন্য কোনো ভেন্যু পাচ্ছিলাম না। তা ছাড়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ঢাকার বাইরে এই আয়োজন করেছি। সারা দেশে অ্যাথলেটিকস ছড়িয়ে দিতে চাওয়াও এর একটা কারণ। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে আনতেই ঘাসের ট্র্যাকে একটা আয়োজন করেছি। ঢাকার বাইরে এমন আসর স্থানীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিকসকে চাঙ্গা করবে। কিন্তু প্রচারণার অভাবে চট্টগ্রামের সেই প্রজন্ম ঠিকভাবে জানেই না তাদের নগরে বসেছে জাতীয় অ্যাথলেটিকস! গত আসরে সব মিলিয়ে অংশ নেন ৪২২ জন অ্যাথলেট, এবার প্রতিযোগী ৩৭৫ জন। বিকেএসপির কোনো অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছেন না জাতীয় প্রতিযোগিতায়। দু-একজন খেললেও সেটা অন্য সংস্থার হয়ে।
প্রথমবারের মতো জাতীয় অ্যাথলেটিকসে অংশ নিতে চট্টগ্রামে এসেছেন সুরাইয়া আক্তার। ঢাকার এই অ্যাথলেট ঘাসের মাঠে দৌড়ে বেশ অসন্তুষ্ট। সুরাইয়া বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল জাতীয় অ্যাথলেটিকসে সিনথেটিক টার্ফে দৌড়াবো। স্বপ্নটা পূরণ হলো না। এখানে দৌড়ানোর সময় মনে হচ্ছিল এই বুঝি পড়ে গেলাম হোঁচট খেয়ে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অ্যাথলেট এই জাতীয় আসরকে বললেন- এটা ফেডারেশনের ‘শো’ দেখানো ছাড়া আর কিছু না। উঁচু-নিচু মাঠে চুনের দাগের মধ্যে দৌড়ে উন্নতি করার কিছু দেখছি না।’
মাঠের মাপ নিয়ে অভিযোগ বিভিন্ন সংস্থা ও জেলার কোচ-কর্মকর্তাদের। ৪০০ মিটার দৌড়ের দূরত্বটা আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে করা হয়নি। সকালে পুরুষদের ১৫০০ মিটার দৌড়ের ফাইনাল হলেও সেটির ফলাফল দিন শেষে বাতিল করে দেন বিচারকেরা। পরে জানা যায় ২০ মিটার দূরত্ব কম ছিল এই ইভেন্টে। স্টার্টার ও লাইনম্যান তা আমলেই নেননি!
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর