× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালের বেপরোয়া কর্মচারী ফারুক

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
১৯ জানুয়ারি ২০২০, রবিবার

 ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের এক বেপরোয়া কর্মচারী ফারুক মিয়া। সিরিঞ্জ দিয়ে পানি ঢুকিয়ে হাসপাতালের বায়োমেট্রিক মেশিন অচল করে আলোচিত এখন চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মচারী। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে নিয়োজিত ফারুকের বিরুদ্ধে ডিউটি কামাই করা ছাড়াও নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তাকে। থানাতেও দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। এ ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও করেছে। ঘটনার তদন্তে প্রধান করা হয়েছে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রানা নূর শামসকে। সে কেন এমনটি করেছে তা জানতে চাইলে জানায়, ‘আমাদের অনেক কষ্ট’।
সেকারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারণা অফিস ফাঁকি দিতে অসৎ কর্মচারীদের একটি চক্র ফারুকের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক মেশিনটি অচল করিয়েছে।

তার আরেক ভাই হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. উজ্জল মিয়ার বিরুদ্ধেও আছে অভিযোগ। হাসপাতালে এসে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগী পাঠানোতেই ব্যস্ত থেকেছে ফারুক। হাসপাতালের ডিউটি বাদ দিয়ে নিজের ইলেকট্রিক দোকানে পড়ে থাকতো সে।  ফারুক ২০০৬ সালের ২২শে জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দেয়। আর উজ্জলের চাকরি হয় ২০১৪ সালের ৩১শে জুলাই। এদিকে ঘটনার ৩ দিন পর জেলা সদর হাসপাতাল থেকে ফারুকের বায়োমেট্রিক মেশিন অচল করার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারনকৃত ফুটেজ সংগ্রহ করেছে সদর থানা পুলিশ। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম উদ্দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন আমরা এর তদন্ত করছি। ১৫ই জানুয়ারি ভোর ৫টা ৫৭ মিনিটের দিকে একটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকে স্থাপিত বায়োমেট্রিক মেশিনটিতে পানি ঢুকিয়ে দেয় পরিচ্ছন্নতাকর্মী মো. ফারুক মিয়া। মেশিনটি অচল হয়েছে তা নিশ্চিত হয়ে সেখান থেকে সটকে পড়ে সে। প্রায় ৩ মিনিট সময় ধরে এই কাজ করে ফারুক। যা হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এর সপ্তাহখানেক  আগেও মেশিনটি একবার অচল করা হয়েছিলো। তখন কেউ সাবোটাজ করতে চাইছে কর্তৃপক্ষের এমন সন্দেহ হলে প্রশাসনিক ব্লকে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপিত স্থানে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। রাত্রিকালীন ডিউটি শেষে ফেরার পথে ফারুক প্রশাসনিক ব্লকে ঢুকে মেশিনটিতে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে পানি ঢুকিয়ে দেয়। এরপর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালে কর্মকর্তারা হাজিরা দেয়ার জন্যে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান মেশিনটি অচল। এর ভেতর থেকে পানির ফোটা পড়ছে। ভেতরেও পানি আছে বলে বুঝা যায়। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে পান পরিচ্ছন্নতাকর্মী ফারুক সিরিঞ্জের মাধ্যমে এতে পানি ঢুকিয়েছে। সকাল ৫টা ৫৭ মিনিট থেকে ৬টার মধ্যে। ওইদিনই পরিচ্ছনতাকর্মী মো. ফারুক মিয়াকে সরকারি সম্পদ নষ্ট করার অপরাধে সাময়িক বরখাস্ত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। থানায় হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রম বাধা সৃষ্টির চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগ দেয়া হয় তার বিরুদ্ধে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র নষ্ট করার অপরাধে ফারুকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে বলা হয় অভিযোগে। হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. শওকত হোসেন জানান, তারা একটি তদন্ত কমিটি করেছেন এব্যাপারে। তিনি বলেন ফারুক সরকারের একটি সিস্টেম অচল করেছে। বায়োমেট্রিক মেশিনটির দাম ২৫ হাজার টাকা বলে জানান তিনি। ২০১৮ সাল থেকে হাসপাতালটিতে কর্মরত ডাক্তার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী বায়োমেট্রিক মেশিনের মাধ্যমে হাজিরা দিয়ে আসছেন। অক্টোবর মাসে নতুন এই বায়োমেট্রিক মেশিনটি বসানো হয়। মোট ২৮০ জন স্টাফ এই মেশিনের মাধ্যমে হাজিরা দেন। এরমধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংখ্যা ৯০ জন। অভিযোগ রয়েছে তাদের অনেকেই হাজিরা দিয়ে সরকারি ডিউটি ফেলে অন্যকাজে ব্যস্ত থাকে। তারা কর্তব্যরত আছে কিনা সেটি ফলোআপ হয়না বলেই স্বীকার করেন হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর