প্রশাসনের চোখের সামনে রাস্তায় চাঁদা তোলা হচ্ছে বগুড়ার কাহালু উপজেলাজুড়ে। রাস্তায় নানাভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে রিকশ, অটোরিকশাচালকরা। কোন কারণে চাঁদার টাকা দিতে না পারলে তাদের উপার্জনের বাহনটি আটকে দেয়া হচ্ছে। করা হচ্ছে শারীরিক নির্যাতনও। এমন অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়ার কাহালু উপজেলা শহরসহ পুরো উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে চাঁদা তোলা হচ্ছে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ভটভটি চালকদের থেকে। এসব চাঁদা আদায়ের জন্য কিছু রশিদও ব্যবহার করছে চাঁদাবাজরা। রিকশাচালকদের কাছে দেয়া গত ১৬ই জানুয়ারির একটি রশিদে দেখা গেছে, কাহালু পৌরসভা কর্তৃক অনুমোদিত পরিবহন টোল আদায়।
ওই রশিদে মেয়রের সইও স্ক্যান করা আছে। যদিও একটি সূত্র অভিযোগ করে বলেছে, কাহালু পৌরসভা পরিবহন থেকে টোল আদায়ের জন্য কোন টেন্ডার আহবান করা হয়নি। তারা টেন্ডার ছাড়াই রাস্তা থেকে অবৈধভাবে যানবাহনগুলো থেকে টাকা আদায় করছে। কাহালুর রিকশা চালক আবদুল জলিল মোকাব্বর বলেন, প্রতিদিন কাহালুর বিশেষ বিশেষ মোড়ে কয়েক দফা চাঁদা দিতে হয় তাদের। কেন চাঁদা আদায় করা হয় সেই প্রশ্নে উত্তর তাদের জানা নেই। তিনি আরো বলেন, কেউ যদি টাকা দিতে না পারে তাহলে চাঁদা আদায়ের সাথে জড়িতরা এসব গরিব শ্রমিককে শারীরিক নির্যাতনও করে। প্রতিবাদ করলে রাস্তায় গাড়ি বের করতে দেবে না- এমন ভয় থেকে কেউ তাদের সঙ্গে কথাও বলে না। রাস্তায় টাকা আদায়ের দৃশ্য পুলিশের চোখের সামনে হলেও কখনো তাদের বাধা প্রদান করতে দেখা যায় নি। এবিষয়ে কাহালু থানার অফিসার্স ইনচার্জ জিয়া লতিফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, চাঁদা শুধু কাহালু কেন পুরো বগুড়া জেলায় তোলা হচ্ছে। বিষয়টি আজ-কালকের নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ বছর ধরে এখানে যানবাহন থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। আমরা অনেকবার নিষেধ করেছি এবং করে যাচ্ছি। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পৌরসভার মেয়রকে জিজ্ঞেস করতে বলেন। টেন্ডার ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কাহালু পৌরসভার নামে যানবাহন থেকে চাঁদা তুলছে কিভাবে সেটি জানার জন্য গত দুদিন পৌরসভার মেয়র হেলাল উদ্দিন কবিরাজের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান আকন্দ মানবজমিনকে বলেন, কাহালুর রাস্তায় বেআইনিভাবে জোর করে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ভটভটি থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এই চাঁদা আদায়ের হচ্ছে পুলিশ এবং মেয়রের নির্দেশেই। রাস্তায় এভাবে চাঁদা আদায় রাষ্ট্রবিরোধী উল্লেখ তিনি দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।