শরীয়তপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র দাউদ ইব্রাহীমকে হাতুড়িপেটা করেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে তার বাম হাত ভেঙ্গে গেছে। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠেছে, এ ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রলীগের ইয়ার কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান ওরফে শুভ ঢালী।
শরীয়তপুর পালং মডেল থানা ও কলেজ সূত্র জানায়, রোববার সকালে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ চত্বরে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। তখন বিষয়টি কলেজের ছাত্রলীগ নেতারা মিটিয়ে দেন। দুপুর ১টার দিকে একাদশ শ্রেণির ছাত্র দাউদ ইব্রাহীমকে শহরের দুবাই প্লাজার কাছে একা পেয়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়।
কলেজের দ্বাদশ শ্রেণি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ ঢালীর নেতৃত্ব ওই হামলায় অংশ নেন জহিরুল ইসলাম, বাধন, রিফাত ও ফাহিম। তারাও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
হাতুড়িপেটায় দাউদ ইব্রাহীমের বাম হাত ভেঙ্গে গেছে। আর ডান হাতের কনুইতে আঘাত পেয়েছেন। খবর পেয়ে সহপাঠিরা তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মফিজুর রহমান স্বপন বলেন, তার বাম হাতের কনুইর নিচে ভেঙ্গে গেছে। দু’এক দিনের মধ্যে সেখানে অস্ত্রোপচার করাতে হবে। হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর কারণে আঘাতটা মারাত্মক।
ঘটনার পর থেকে শুভ ঢালি, জহিরুল ইসলাম, বাধন, রিফাত ও ফাহিমের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ব্যাপারী বলেন, রোববার সকালে কলেজে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দে মারামারির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি আমরা মিটমাট করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারপর কেন একজন নিরীহ ছাত্রকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়া হলো তা আমি বুঝতে পারছি না। অভিযোগ যেহেতু একজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে, তাই আমার সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ করবো। এরপর তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দাউদ ইব্রাহীমের বাবা শহীদুল ইসলাম ব্যাপারী বলেন, আমার ছেলে কোন মারামারি ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। তারপরও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে। পিটিয়ে তার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা সন্ত্রাসের কাছে অসহায়, এখন আর কি করবো? মার খাওয়া ছাড়া আমাদের কি করার আছে?
পালং মডেল থানা পুুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, এক ছাত্রলীগ নেতা কলেজের ছাত্রকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে- এমন মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্রের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেবো।