× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

স্বজনের জন্য অপেক্ষা

অনলাইন

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
(৪ বছর আগে) জানুয়ারি ২০, ২০২০, সোমবার, ৬:৫১ পূর্বাহ্ন

চরফ্যাশনে তেতুলীয়া নদীতে বালুবাহী জাহাজ থেকে বেল্লাল হোসেন (২৮) নামের এক সুকানী (চালক) নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জাহাজ স্টাফরা জানান, নদী থেকে বালি নিয়ে জাহাজটি গত শনিবার বিকেলে শশীভূষণ থানার লেতরা ব্রীজ ঘাটের উদ্দেশ্যে আসছিল। তেতুলিয়া নদী থেকে মায়ানদীর প্রবেশমুখে ডুবোচরে ধাক্কা লেগে সুকান দ-ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সুকানী ভারসাম্য হারিয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন বেল্লাল।

পুলিশ এ ঘটনায় জাহাজের ৪ স্টাফকে আটক করলেও গভীর রাতে ১ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় নিখোঁজের স্ত্রী ও তার পরিবার ঘটনাটি রহস্যে ঘেরা ও সন্দেহের চোখে দেখছে। নিখোঁজ সুকানী বেল্লাল চর কুকরী মুকরী এলাকার হাসিন উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।


স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী নদীর পাড় ঘেরা তরমুজ চাষী হাতেম মল্লিক, নেছার মল্লিকসহ অনেকে জানান, নদী থেকে বালি নিয়ে জাহাজটি শনিবার ২টার সময় লেতরা ব্রীজ ঘাটের উদ্দেশ্যে আসছিল। তেতুলিয়া নদী থেকে মায়ানদীতে প্রবেশমুখে ভাটার কারনে আটকে যায়। বিকাল ৩টায় জাহাজে থাকা ষ্টাফরা চিৎকার দেয় নদীতে পড়ে সুকানী বেল্লাল হোসেন নিখোঁজ হয়। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত লোক জড়ো হলেও জাহাজে থাকা ষ্টাফরা কেউ পানিতে নেমে খোঁজ করতে দেখেনি।
তাছাড়া নদীর তীর থেকে মাত্র ২৫ হাত দুরে জাহাজটি আটকে ছিল । সেখানে পানি ছিল ৭/৮ হাত। এখানে কেউ পড়লে নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।


এদিকে নিখোঁজ বেল্লালের স্ত্রী রিতু (২২) জানান, দুপুর ২টায় স্বামীকে কল করলে সে জানায়, জাহাজটি আটকে আছে, আমি ভাত খেয়েছি, তুমি ভাত খেয়ে নাও, এসব কথা বলে সে ফোন কেটে দেয়। বিকাল ৩টায় আবার কল করলে ফোন রিসিভ করে জাহাজের স্টাফ আকতার হোসেন। তখন স্বামীর কাছে ফোন দিতে বললে আকতার জানায়, ভাইতো নেই, সে নিখোঁজ হয়ে গেছে।

তার স্ত্রী রিতু আরো জানান, ৫ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তার স্বামীর মোবাইলে কিছু ব্যক্তিগত ছবি থাকায় অন্যের হাতে দেননা। সে যদি নদীতে পড়ে যেতো তবে মোবাইলটিও নদীতে পড়ে যেতো। মোবাইলটি আকতারের হাতে এলো কি করে? আমি এ কথা কোন দিন বিশ্বাস করিনা, নদীতে পড়লে ওর হাতের মোবাইল আক্তারের কাছে থাকবে কেন? তাছাড়া আক্তারের সঙ্গে বেল্লালের ৫/৬ দিন পুর্বে ঝগড়াও হয়েছে। এসব প্রশ্নকে সামনে রেখে মূল রহস্য উদঘাটন করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবী করেন স্ত্রী ও তার পরিবার।

জাহাজ মালিক নাজিম সিকদার জানান, দূর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করা হলেও এখন পর্যন্ত নিখোঁজ সুকানীর সন্ধান মেলেনি। শশীভূষণ থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা নৌকা ট্রলার নিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে।

বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত ডুবোরীদল উদ্ধার অভিযানে অংশ নিলেও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতার অভাবকে দায়ী করেছে তারা। উদ্ধার অভিযানে গরিমসি ও একজনকে ছেড়ে দেয়ার কারণে ভুক্তভোগী পরিবারটি প্রশাসনের দিকে আঙ্গুল তুলছে।

চরফ্যাশন ফায়ার সার্ভিস অফিস সুত্রে জানা গেছে, গতকাল রবিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থল এবং তার আশপাশে তল্লাশী চালিয়েছে ডুবরী দল। কিন্তু লাশের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।

বেল্লালের বড় ভাই কবির হাওলাদার বলেন, তল্লাশী অভিযানের নামে ডুবরী দল লোক দেখানো অভিযান চালিয়েছে। সঠিক ভাবে তল্লাশী চালালে আমার ভাইকে পাওয়া যাবে।

এ ঘটনায় শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম জানায়, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাহাজের ৪ স্টাফকে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে ১ কিশোর স্টাফকে ছেড়ে দেয়। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে তাকে আবার থানা হেফাজতে আনা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর