সৌদি প্রবাসী কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ভাট্টা গ্রামের মঞ্জু ভূঁইয়ার পুত্র ফয়সাল ভূঁইয়া (৩৩) সংসারের সুখ শান্তির আশায় নবজাতক শিশুপুত্রকে রেখে তিনবছর আগে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। কাজের অবসরে প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথা বলেন মা-বাবা, স্ত্রী ও ভাইদের সঙ্গে। খোঁজ-খবর রাখেন রেখে যাওয়া নবজাতক সন্তানের। গত ২৪শে ডিসেম্বর মঙ্গলবার বার্ধক্যজনিত কারণে তার মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েও ছুটিতে বাড়ি আসতে পারেননি তিনি। তাই মায়ের মৃত্যুর পর থেকে প্রতিদিনই একবার ফোনে কথা বলেন বাবা, স্ত্রী ও ভাইদের সঙ্গে। গত ১৪ই জানুয়ারি মঙ্গলবার সারাদিন পার হয়ে গেলেও ভাইয়ের ফোন না পেয়ে সন্ধ্যায় ছোটভাই রিগান ভূঁইয়া ফোন করেন ফয়সাল ভূঁইয়ার মোবাইল ফোনে। কিন্তু সেখানে ফোন রিসিভ করেন তার ভাইয়ের এক বন্ধু।
ভাই কোথায় জিজ্ঞাসা করতেই ওপাশ
থেকে খাণিকক্ষণ চুপ থেকে ভারী গলায় জানান, ফয়সাল ভূঁইয়া কিছুক্ষণ আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ মায়ের শোককে ম্লান করে গণণবিদারী আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে আশপাশের এলাকা। রিগান ভূঁইয়া জানান, ফয়সাল ভূঁইয়া সৌদি আরবের হাপারাল বাতান এলাকায় একটি মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। গত ১৪ই জানুয়ারি মঙ্গলবার ডিউটি শেষে বাসস্থানে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। ভাইয়ের লাশ দেশে আনার জন্য ধরনা দিচ্ছেন কিশোরগঞ্জ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে। এদিকে ফয়সাল ভূঁইয়ার রেখে যাওয়া নবজাতক রেদুয়ান ভূঁইয়া যার বয়স এখন সাড়ে তিনবছর। একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্ত্রী জুবায়দার চোখে-মুখে অন্ধকার। কী হবে ছেলের ভবিষ্যৎ! শেষবারের মতো স্বামীর লাশটা একবার দেখতে চান। অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, কবে আসবে লাশ? করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত লস্কর পারভেন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সৌদি প্রবাসী ফয়সাল ভূঁইয়ার লাশ দ্রুততম সময়ে দেশে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাই। কিশোরগঞ্জ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক আলী আকবর বলেন, নিহতের লাশ দেশে আনার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ই-মেইল ও ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।