শেষের পাতা

নারায়ণগঞ্জে কিশোরীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ

সোনাইমুড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে

২০২০-০১-২২

নারায়ণগঞ্জে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক কিশোরী (১৪)কে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. তূর্য এবং যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে দর্জি শ্যামল। এরমধ্যে দর্জি শ্যামল ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তাকে ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে কাশীপুর খিলমার্কেট এলাকার নিজ বাসা থেকে শ্যামলকে এবং একই এলাকার অপর একটি বাসায় পালিয়ে থাকা অবস্থায় ধর্ষক তুর্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তুর্য কাশীপুর খিল মার্কেট এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে এবং শ্যামল একই এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।

গতকাল দুপুরে যুবলীগ নেতা দর্জি শ্যামলকে থানা থেকে আদালতে পাঠানোর সময় ফটো সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে শ্যামলের সহযোগীরা ৩ ফটো সাংবাদিকের উপর চড়াও হয় এবং ক্যামেরা কেড়ে নেয়। গত রোববার বিকেলে নিজ বাসা থেকে প্রতিবেশির বাসায় আরবি পড়তে যাবার সময় ওই কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় তুর্য ও তার সহযোগীরা। পরে নিজের বাসায় আটকে রেখে ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে তুর্য। খবর পেয়ে কিশোরীর পরিবার তুর্যের বাসা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে। ওই সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবলীগ নেতা দর্জি শ্যামল বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার কথা বলে তুর্যকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। কিশোরীর মা এ ঘটনায় মামলা করতে চাইলে শ্যামল তাদের হুমকি দেয়। একারণে মামলায় ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা ও ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দেয়ার অভিযোগে শ্যামলকেও আসামি করা হয়। ধর্ষিতা কিশোরীর মা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় সোমবার ধর্ষক তুর্য ও তাকে সহায়তাকারী শ্যামলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, ধর্ষণের শিকার কিশোরী জন্মগত ভাবেই কিছুটা শারীরিক প্রতিবন্ধী। প্রতিবেশির বাড়িতে সে প্রতিদিন বিকেলে আরবি পড়তে যায়। ওই সময় তুর্য কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। মেয়েটি সেই প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিতো তুর্য। এ ব্যাপারে প্রতিকার পাওয়ার জন্য যুবলীগ নেতা শ্যামলের দ্বারস্থ হয় মেয়েটির পরিবার। এদিকে গত রোববার বিকেলে আরবি পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হয় কিশোরীটি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ফিরে না আসায় মেয়ের খোঁজ শুরু করেন তার পরিবার। জানতে পারেন যে, মেয়েটি ঘটনার দিন প্রতিবেশির বাড়িতে আরবিই পড়তে যায়নি। এক পর্যায়ে জানতে পারেন মেয়েটিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গেছে তুর্য ও তার কয়েকজন সহযোগী। খবর পেয়ে ওইদিন রাত ৯টার দিকে তুর্যর বাড়িতে গিয়ে দেখেন বাসাটি বাইরে থেকে তালা লাগানো। তবে দরজার সামনে তুর্যর কয়েকজন সহযোগী দাঁড়ানো। ওই সময় তুর্যর সহযোগীরা চলে গেলে মেয়েটির পরিবার স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বাসার দরজায় টোকা দিলে ভেতর থেকে মেয়েটির কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। ওই সময় বাসার দরজা খোলা হলে সেখানে পৌঁছেন যুবলীগ নেতা শ্যামল। তিনি এ ঘটনার আপস মীমাংসার জন্য বললে মেয়েটির পরিবার তাতে রাজি না হয়ে মামলা করার কথা জানালে শ্যামল ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটির পরিবারকে গালিগালাজ করে এবং হুমকি ধামকি দিতে থাকে। ওই সময় শ্যামলের প্রশ্রয়ে তুর্য ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃত শ্যামলের বিরুদ্বে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক সহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি সন্ত্রাসী ও বখাটেদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সোনামুড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, প্রেমিকসহ আটক ৫
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী ও সোনাইমুড়ি প্রতিনিধি জানান, সোনাইমুড়ি রশিদপুরে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে রাস্তা থেকে বাগানবাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর ২ বান্ধবীসহ ৫ জন কে আটক করা হয়েছে। রশিদপুর গ্রামের আবদুল গফুর জানায়, প্রতিদিনের মতো সোমবার তার মেয়ে রশিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী রিয়া মনি (১৬) সকালে স্কুলে যায়। বিকেলে স্কুল ছুটির পর তার বাড়ি ফিরতে দেরী দেখে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেয়েকে খুঁজতে বেরিয়ে খবর পায়, গ্রামের পরিত্যাক্ত বাগান বাড়িতে তার মেয়ের লাশ পড়ে আছে।

সোনাইমুড়ি থানার সাব ইনস্‌পেক্টর রেজাউল করিম জানান, নিহত রিয়া মনির সাথে কয়েকটি ছেলের প্রেমের পত্র ও দুটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রিয়া মনির সাবেক প্রেমিক হাবিব বর্তমান প্রেমিক রাকিব, হাসান, হাবিবের বোন সুরাইয়া ও রিয়ামনির বান্ধবী ফেন্সীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হাবিবের বোন সুরাইয়ার নিকট থেকে পুলিশ অনেক তথ্য পাচ্ছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান। তিনি জানান, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে ঘটনা পরিষ্কার হবে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খলিল উল্লা মানবজমিনকে জানান, ময়না তদন্তের সময় ভিকটিমের ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তা মেডিকেল কলেজে টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক জানান, তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status