× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আলোচনায় সেই পীর /মৌলভীবাজারে যুবককে তুলে নিয়ে খুন

প্রথম পাতা

ইমাদ-উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে
২২ জানুয়ারি ২০২০, বুধবার

মৌলভীবাজার হিলালপুর এলাকায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে রাজন আহমদ রাজা (৩২) নামের এক যুবককে রাস্তা থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে উঠতি সন্ত্রাসী গ্রুপ পীর বাহিনীর প্রধান নামে পরিচিত পীর আজাদ পার্শ্ববর্তী বালিকান্দি খেয়াঘাট থেকে রাজনকে অপহরণ করে হিলালপুরস্থ পীর আজাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় পীর আজাদ ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তাকে। পরে একটি সিএনজি অটোরিকশায় রাজনের মরদেহ তোলে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে পীর আজাদ বাড়ি তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে মানবজমিনকে জানান, নিহত রাজন পীর আজাদের ছোট ভাই রুবেল হত্যার এজহারভুক্ত ৮নং আসামি। বর্তমানে সে জামিনে ছিল। রাজন সদর উপজেলার বুদ্ধিমন্তপুর এলাকার আশিক মিয়ার ছেলে।
ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।

কে সেই আলোচিত পীর আজাদ: মৌলভীবাজার শহরের আলোচিত নাম ‘পীর’। কে সে? এ প্রশ্ন শহর জুড়ে মানুষের মুখে মুখে। জানা যায় বড়হাট, কুসুমভাগ ও হিলালপুর এলাকার উঠতি বয়সী সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান হিসেবে আতঙ্কের নাম এই পীর আজাদ। গতকাল রাজন আহমদ রাজা খুন হওয়ার পর আবারো নতুন করে তার অপকর্মের বিষয়গুলো আলোচনায় আসে। গত বছর মৌলভীবাজার শহরে উঠতি সন্ত্রাসী রুবেল গণপিটুনিতে নিহত হওয়ার পরই মূলত আলোচনায় আসে এই ‘আজাদ পীর’। সে ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও নিহত রুবেলের বড় ভাই। মূলত আজাদের সাথে বাবুল নামের একজনের দ্বন্দ্বের কারণেই বলির পাঁঠা হয় রুবেল। তার ভাই রুবেল পীর আজাদ বাহিনীর সেকেন্ট ইন কমান্ড ছিল। জানা যায় আজাদ হোসেন পীর মৌলভীবাজার শহরতলীর হিলালপুর এলাকায় বসবাস করে। তার পিতা মৃত ছৈইদুল্লাহ। আজাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ। রয়েছে মারামারি, চুরি, ছিনতাই, মাদক ও ইয়াবা ব্যবসা, ডাকাতি, নারী নির্যাতনের অসংখ্য অভিযোগ। এমনকি মৌলভীবাজার মডেল থানায় আজাদ হোসের পীর এর বিরুদ্ধে গত বছরের মে মাস পর্যন্ত ৬টি পৃথক পৃথক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মৌলভীবাজার মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, গেল বছর  ২৮শে জানুয়ারি খুনের উদ্দেশে মারামারির অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই বছরের ২৩শে জানুয়ারি মাদক ও ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়। ২০১৭ সালের ২৯শে অক্টোবর মৌলভীবাজার মডেল থানায় গুরুতর জখম করে ডাকাতির অপরাধে আরেকটি মামলা হয়। ওই বছরের ২৫শে এপ্রিল খুন করার উদ্দেশে মারামারি অপরাধে একটি মামলা হয়। ২০১৬ সালের ২৬শে অক্টোবর তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। ১৭ সালের ৬ই মে মৌলভীবাজার মডেল থানায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের আরোও একটি মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ আইনের ৪ ধারায় তিনি মামলার এজাহারে অভিযুক্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি একটি নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে বিভিন্ন সময় ওদের নিয়ে সে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত হয়। ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করারও সাহস পায় না। গেল বছরের মে মাসে তার ভাই সন্ত্রাসী রুবেল নিহত হওয়ার পরও এক টমটম চালককে আটক করে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে বলে অভিযোগ করেছেন ওই গাড়ি চালক। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে নির্যাতনে গর্ভের সন্তান নষ্ট করারও অভিযোগ রয়েছে। শহরের কুসুমবাগ এলাকার ব্যবসায়ী ও সিএনজি চালকরা তার বাহিনীর কারণে সব-সময় আতঙ্কে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও চালক এবিষয়টি নিশ্চিত করেন। সরেজমিনে আজাদ হোসেন পীরের হিলালপুর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। রাজন হোসেন রাজা খুন হওয়ার পর সে গাঢাকা দিয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর