প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম দেখতে চাই না। জনগণ যাতে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে এবং এজেন্টরা যাকে কেন্দ্রে থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। গাফলাতির কোনো অভিযোগ এলে তাদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ বুধবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য আমাদের প্রত্যয় রয়েছে, দৃঢ়তা রয়েছে, নিষ্ঠা এবং একগ্রহতা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমরাই একমাত্র কর্তৃপক্ষ। যাদের নির্দেশে এবং ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে। যে যার অবস্থান থেকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এটা করা গেলেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্টু হবে।
সিইসি বলেন, বাংলাদেশে এক সরকার, এক দেশ, এক রাজধানী। সেই প্রেক্ষাপটে ঢাকা সিটি দুইটি অংশে বিভক্ত। রাজধানীর দুইটি অংশে নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচনের দিকে আন্তর্জাতিক মহল থেকে শুরু করে দেশের সর্বস্তরের জনগণ তাকিয়ে রয়েছে। ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে জনগণ, প্রার্থী এবং ভোটারদের মাঝে একটা মহাউৎসব আমেজ চলছে। এই আমেজের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বলবো নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্টু হয়। আমার ভোট আমি দেব। একইসঙ্গে যে পছন্দের প্রার্থীকে দেব সেই প্রার্থীকে যেন দিতে পারি সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আর এইজন্য যার যার অবস্থান থেকে আইন দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
কেএম নূরুল হুদা আরও বলেন, আমি চাই না নির্বাচনে কোন রকমের অভিযোগ, অনিয়ম ক্রটি বিচ্যুতি নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত আসুক। আমি আশা করবো মাঠ পর্যায়ে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তারাই যেন যে কোন অনিয়ম ক্রুটি বিচ্যুতি কঠোরভাবে দমন করেন। যাতে নির্বাচন কমিশন পযন্ত কোন অভিযোগ আসতে না পারে। ইসিতে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রায়ই বলা হয়ে থাকে এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়া হয় না। কিংবা ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এই ধরনের অভিযোগ যাতে আর না আসে। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট প্রবেশ করলে তার নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে কোন এজেন্ট বাড়ি থেকে না আসলে তাকে নিয়ে আসার দায়িত্ব আমাদের না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, কোনো ধরনের অনিয়ম ও ক্রটি বিচ্যুতি দেখতে চাই না। গাফলাতির কোনো অভিযোগ এলে তাদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশে সন্তাষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, সবার নজর ঢাকা সিটির ভোটের দিকে। আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। ভোটে সবাই মহাউৎসবের আমেজে রয়েছে। এর যথাযথ গুরুত্ব অনুধাবন করে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বিএনপি মেয়র প্রার্থীর প্রচারে হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন সিইসি। তিনি বলেন, এটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ দেয়ার আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্যে বলেছে। ইভিএমে ভোট প্রক্রিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির সফলতাও তুলে ধরেন সিইসি বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। এতে করে কেন্দ্র দখল করার কোন সুযোগ নেই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ও ইসির সিনিয়র মো. আলমগীর, ঢাকার দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, বিজিবি মহাপরিচালক, ডিজিএফআই পরিচালকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।