মণিরামপুরে বিয়ে ও কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হত্যার উদ্দেশ্যে দরিদ্র পরিবারের নবম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে কৌশলে কোমল পানীয় (আরসি) বলে বিষপান করানোর অভিযোগ উঠেছে। কথিত প্রেমিক কলেজছাত্র কর্তৃক এমন অপরাধের ঘটনা অজ্ঞাত কারণে কয়েকদিন গোপন থাকে। খবর পেয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই ছাত্রীর বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার পর উক্ত ঘটনা বিভিন্ন মহলে জানাজানি হয়। গত মঙ্গলবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকার উদ্দেশ্যে নেয়া হয়।
জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামের মাহবুর রহমানের কলেজ পড়ুয়া পুত্র সাজিন হোসেন বাড়ির পাশের ভাটা শ্রমিক নূর ইসলামের মাদ্রাসা পড়ুয়া কন্যা পাপিয়া সুলতানাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল এতে সে রাজি না হলে পরে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ওই ছাত্রীর ঘরের দরজাবিহীন খাটের নিচে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে থাকে সাজিন। এরপর ওই ছাত্রী ঘরের মধ্যে পড়তে গেলে তার হাত-মুখ চেপে ধরে কোনো কথা না বলার হুমকি দিয়ে তাকে আরসি খাওয়ার কথা বলা হয়। এতে সে না করলে তার মুখের ভেতর বোতলে থাকা তরল জাতীয় কিছু ঢেলে দেয়া হয়।
একপর্যায়ে মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে রেফার করা হয় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু দারিদ্র্যতার কারণে তার পরিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। জানতে চাইলে, ওই মাদ্রাসাছাত্রীর দরিদ্র পিতা নূর ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার মেয়েকে হত্যার জন্য জোরপূর্বক বিষ খাওয়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে
কলেজছাত্র সাজিনের চাচা বিল্লাল হোসেনসহ তার পরিবারের দাবি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাদের ফাঁসাতে ওই ছাত্রীসহ তার পরিবারের লোকজন মিথ্যা কথা বলছে। জানা যায়, নিজের সামর্থ্য ও বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গত মঙ্গলবার সকালে দরিদ্র পিতা নূর ইসলাম তার মেয়েকে ঢাকায় পাঠিয়েছেন। মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে গত সোমবার রাতে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে দারিদ্র্যতার কথা জানতে পেরে মানবিক কারণে চিকিৎসার জন্য ওই ছাত্রীর পিতাকে দুই হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। ওই ছাত্রীর পরিবার মামলা করলে তদন্ত পূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।