চেনা মাঠ চেনা পরিবেশে সমর্থন যোগাতে এদিন স্টেডিয়ামে দর্শক এসেছিল বেশ। দলকে উজ্জীবিত করতে আগাম বোনাসেরও ঘোষণা ছিল। মাঠে ছিলেন ব্রাজিলের সাবেক তারকা গোলরক্ষক হুলিও সিজার। এসবের কোনো কিছুতেই ফুটবলের ভাগ্য ফেরেনি। পরিবর্তন আসেনি জামাল-সুফিলদের নৈপুণ্যে। গোল মিসের মহড়া আর বাজে ডিফেন্ডিংয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডির কাছে বাংলাদেশ হারলো ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে। একাই তিন গোল করেছেন জসিপন। আগের দিন সেশেলসকে ১-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মতো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে উঠেছে ফিলিস্তিন।
আগামীকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে নামবে আফ্রো-এশিয়ান দুই দল বুরুন্ডি-ফিলিস্তিন।
আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারানোয় আশা জেগেছিল। কাল দর্শকের ঢল নামে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। ডাকঢোল নিয়ে স্টেডিয়ামে হাজির হওয়া দর্শকদের হতাশ হতে সময় লাগেনি। শুরুতেই ইনফর্ম স্ট্রাইকার মতিনের ইনজুরি। আগের ম্যাচে জোড়া গোলকরা মতিন চতুর্থ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। সিলেটের এই ফরোয়ার্ড মতিনের বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই ২২তম মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মাহবুবুর রহমান সুফিল। পরে ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন সাদউদ্দিন, ইব্রাহিম। কমপক্ষে আধাডজন সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন বাংলাদেশের এই তিন ফরোয়ার্ড। এদিন বুরুন্ডির গোলরক্ষক অ্যামি ফেলসও ছিলেন দুর্দান্ত। জামাল, সাদের চারটি গোলমুখের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন তিনি। পোস্টও এদিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের সামনে। অন্যদিকে চার/পাঁচটি বলার মতো আক্রমণ করে বুরুন্ডি। শেষে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৫১ নম্বরে থাকা দলটির কাছে এতো বড় হার দেখছে বাংলাদেশ।
২১তম মিনিটে সুফিলের ছোট পাস ধরে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কাছের পোস্টে নেয়া শট গোলরক্ষক ফেরান। পরের মিনিটে দিও মারসির ভুলে বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সুফিল। কিন্তু সময় নষ্ট করে সুযোগ হারান এই উইংগার। প্রথমার্ধের শেষ দিকে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে ব্যালানচার্ডের আড়াআড়ি ক্রস রায়হান পা বাড়িয়েও বিপদমুক্ত করতে পারেননি; তার পেছনে থাকা জসপিন নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন। যোগ করা সময়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় বুরুন্ডি। আবারও ডান দিক থেকে ব্যালানচার্ডের ক্রসে চার ডিফেন্ডারের মাঝ থেকে লাফিয়ে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন জসপিন। প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে থাকা এই ফরোয়ার্ডের এটি ষষ্ঠ গোল। ৪৮তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে গোলরক্ষককে একা পেয়েও তার গায়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন সাদউদ্দিন। একটু পর আশরাফুল ইসলাম রানার দৃঢ়তায় ব্যবধান বাড়েনি। দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুতেই সহজ সুযোগ নষ্ট করেন সাদউদ্দিন এই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সরাসরি গোলরক্ষকের গয়ে মারেন এই ফরোয়ার্ড। ৬১ জামালারের ক্রসে সুফিলের হেড কর্ণারে রক্ষা করেন বুরুন্ডির গোলরক্ষক অ্যামি ফেলস। ৬৪ মিনিটে জামালের কর্নারে সাদউদ্দিনের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আবারো বুরুন্ডির ত্রানকর্তা হয়ে দাড়ান অ্যামি ফেলস। ৭৫ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার দারুণ ফ্রিকিক কর্নারে রক্ষা করেন এই গোলরক্ষক। পরের মিনিটে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা রাকিব বাইরে মারলে সহজ সুযোগ নষ্ট হয় স্বাগতিকদের। কাউন্টার অ্যাটাকে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঢুকেদেন জসপিন। এটি বুরুন্ডির এই ফরোয়ার্ডেও টানা দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। অতিরিক্ত সময়ে সাদউদ্দিনের হেড গোলরক্ষককে ফাঁকি দিতে পারলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাইডপোস্ট।