প্রচণ্ড হাড় কাঁপানো শীতে রংপুর অঞ্চলে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যে চলতি মাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রমেক হাসপাতালে দগ্ধ ১৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় প্রতিদিন দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বাড়লেও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসক কমতে কমতে একজনের পর্যায়ে চলে এসেছে। অথচ রমেক হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১০টি। ৭ জন চিকিৎসক, ৩ জন অধ্যাপক ডাক্তারসহ ১০টি পদ থাকার কথা থাকলেও একজন চিকিৎসক ও কিছু শিক্ষানবিশ দিয়ে চলছে রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিট বিভাগ। ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।
রমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের সেবা দেয়ার জন্য রয়েছে মাত্র একজন চিকিৎসক।
এ ছাড়া কিছু শিক্ষানবিশ চিকিৎসক আর আয়াদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। খাতা কলমে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে সাত চিকিৎসক ও ৩ প্রভাষক দায়িত্বে থাকার কথা। তবে দায়িত্ব পালন করছেন এম এ হামিদ পলাশ নামে এক চিকিৎসক। তিনি ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বলেই নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে বার্ন ইউনিটে কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, বার্ন ইউনিটে ভালো সেবা নেই। চিকিৎসক নেই। চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। স্যালাইন ছাড়া হাসপাতাল থেকে আর কিছুই দেয়া হয় না। তবে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা এসে মাঝে মধ্যে খোঁজখবর নিয়ে যান। চলতি শীত মৌসুমে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত এক মাসে ওই ইউনিটে এখন পর্যন্ত ৮ নারী ও দুই শিশুসহ মারা গেছে ১৩ জন। এখনো চিকিৎসাধীন আছে ২৫ জন। ফলে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এম এ হামিদ পলাশ জানান, মোট ১০টি পদ থাকলেও শুধু আমি একাই কাজ করছি। তবে মাঝে মধ্যে আন-অফিসিয়ালি আরেকজন ডাক্তার এসে কাজ করেন। আমরা রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য সব সময় কাজ করছি। প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়াও নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। রমেক হাসপাতাল পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম জানান, বার্ন ইউনিটের শূন্য পদে পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত শূন্যপদগুলোতে পদায়ন করা হবে।