হার দিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের ‘মিশন পাকিস্তান’। গতকাল লাহোরে সিরিজের প্রথম টি- টোয়েন্টিতে ১৪১ রান নিয়েও শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করে বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে হারের পর আক্ষেপ ফুটে উঠলো টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর কণ্ঠে। আর যদি কয়েকটা রান বেশি হতো! রান আউটের সুযোগ কিংবা ইনিংসের শেষ দিকের ক্যাচগুলো যদি ধরা যেত। ম্যাচ শেষে দলের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণে রিয়াদ বলেন, ‘ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। উইকেট ছিল বিস্ময়কর, শট খেলা কঠিন ছিল। বল পুরনো ও নরম হয়ে যাওয়ার পর বোলাররা ভালো করেছে। আজ আমরা ১৫ রান কম করেছি।
খুব বেশি বাউন্ডারি মারতে দিয়েছি ওদের। কয়েকটি রান আউটের সুযোগ ও ক্যাচ মিস করেছি। পাকিস্তানের আতিথেয়তা সবসময়ই ভালো। আমরা পরবর্তী ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি।’
পাকিস্তানের ফিল্ডিংটাও ভালো হয়েছে। দুটি রানআউট করেছে তারা। উইকেটের আচরণ বুঝে বোলিং করেছেন বোলাররা। উইকেট নেয়ার চেয়ে বাংলাদেশের রান আটকে রাখাতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন আফ্রিদি-রউফরা। ম্যাচের পর বোলারদের প্রশংসায় বাবর বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ জয়। বোলাররা যেভাবে বোলিং করেছে তা সত্যিই দারুণ। আমরা আশা করিনি পিচ এমন স্লো হবে। তবে আমাদের বোলারদের পরিকল্পনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমি কৃতিত্বের সবটুকু ওদেরই দেবো।’
টসে জিতে আগে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। স্লো উইকেটে দেখে শুনেই খেলতে থাকেন ওপেনার তামিম ইকবাল-নঈম শেখ। ওপেনিং জুটিতে আসে ৭১ রান। তামিম ইকবাল ৩৯ ও নাঈম শেখ ৪৩ রান করে আউট হন। পরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা একটু জ্বলেছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ১৪ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অন্যরা সময়ের চাহিদা মেটাতে পারেননি। লিটন দাস ১৩ বলে ১২, আফিফ হোসেন ১০ বলে ৯ ও সৌম্য সরকার ৫ বলে ৭ রান করে আউট হন। বাঁহাতি পেসার শাহীন আফ্রিদি ২৩ রানে ১ উইকেট নেন। লেগস্পিনার শাদাব খানের শিকার ২৬ রানে এক উইকেট। অভিষিক্ত বোলার হারিস রউফ ৩২ রান দিয়ে নেন আফিফ হোসেনের উইকেটটি।
জবাবে শূন্য রানে অধিনায়ক বাবর আজম ও দলীয় ৩৫ রানে মোহাম্মদ হাফিজকে হারায় পাকিস্তান। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ম্যাচ বের করে নেন শোয়েব মালিক। ৪৫ বলে ৫৮ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে এনে দেন জয়। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা মালিক বলেন, ‘ইনিংসের শুরু থেকেই একটা জিনিস খেয়াল করি, নতুন বলে লাইন বরাবর খেলতে হবে। রান চেজের সময় শুরুতে কিছু ওভার সিঙ্গেল নিয়ে এরপর পাওয়ার হিটিং করতে পারবেন।’ মালিক এই স্ট্র্যাটেজিতে খেলেই সফল। ৫৮ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র ৫টি। ছক্কা মারার কোনো ঝুঁকিই নেননি। ৩২ বলে ৩৬ রান করেন অভিষিক্ত ক্রিকেটার আহসান আলী। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে শফিউল ৪ ওভারে ২৭ রানে নেন ২ উইকেট। আল আমিন ৪ ওভারে ১৮ রানে একটি এবং আমিনুল ইসলাম ২৮ রানে নেন ১ উইকেট। কিন্তু দলের সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে খরচ করেন ৪০ রান। তিনি আরেকটু ভালো যদি করতে পারতেন! এই আক্ষেপটাও রয়ে গেল দিন শেষে।