× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মশা নিধনে অগ্রাধিকার /আতিকের ৩৮ দফা ইশতেহার

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৭ জানুয়ারি ২০২০, সোমবার

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হলে ৩৮ টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন ঢাকা উত্তর সিটি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে মশা নিধন কার্যক্রম। গতকাল  রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।

তিনটি ক্যাটাগরিতে নগরবাসীকে দেয়া আতিকুলের ওইসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলে একটি বাসযোগ্য নগরে পরিণত হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে আছে, উন্নত বিশ্বের মতো আইভিএম (ইন্টাগ্রেটেড ভেকটর ম্যানেজমেন্ট) পদ্ধতিতে ডিএনসিসি, ডিএসসিসি, ওয়াসা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পার্শ্ববর্তী সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়ন। সবার জন্য নানা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এলাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ। টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে আরআরএফ (রিসোর্স রিকভারি ফ্যাসিলিটিস) স্থাপনের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক পশু জবাইকেন্দ্র স্থাপন। তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সমপ্রীতি বাড়াতে শহরের সব ওয়ার্ডে নিয়মিত পাড়া উৎসব উদযাপন।

ডিএনসিসির প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ।
বস্তিবাসীদের জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ। বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ। প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করে নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। ঢাকা উত্তরের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় মিস্ট ব্লোয়ার এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যম বায়ুদূষণ কমানো। ডিএনসিসির বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব কম্প্রিহেনসিভ রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ কেয়ার সেন্টার এবং প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নির্মাণ। ডিএনসিসির এর প্রতিটি ওয়ার্ডে নানাবিধ সুবিধাসংবলিত ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি করা। মিরপুরে ডিএনসিসি’র এর নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্যপ্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ফুটপাত দখলমুক্ত করে এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নেটওয়ার্ক তৈরি করা। হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

যানজট নিরসনে ডিএমপি, ডিটিসিএ, বিআরটিএ, ডিএসসিসি, পরিবহন মালিক সমিতিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত পরিকল্পনা ঢাকা বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের কাজ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সবাইকে নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা। নিরাপদ পথচারী পারাপারের জন্য ঢাকা উত্তরে বিভিন্ন জেব্রা ক্রসিং-এ ডিজিটাল পুশ বাটন সিগনাল নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন। প্রয়োজন অনুযায়ী অধিকাংশ স্থানে এস্কেলেটরসহ নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ। আধুনিক নগর-পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ডিজিটাল ই-টিকিটিং সেবা প্রদান। সাইকেলের জন্য আলাদা লেন (যেখানে সম্ভব) এবং সাইকেল পার্কিং তৈরি করা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন। নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য পরিকল্পিত স্মার্ট বাস স্টপ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ। প্রতিটি মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সেন্সরের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান ট্র্যাক করে সমাধান করা।

নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ। সবার ঢাকা অ্যাপ’র এর মাধ্যমে নাগরিকের অভিযোগ গ্রহণ ও সার্বক্ষণিক তদারকিসহ সব নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা, যেখানে মেয়রের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে। বায়ুদূষণ রোধে ইলেক্ট্রিক বাস সার্ভিস চালুকরণ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা প্রদান। ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হেল্প ডেস্ক তৈরি। ব্যবসায়ীদের কোনো প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন না করে, ডিএনসিসির মালিকানাধীন কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্য চলবে স্ট্রাকচারাল আপগ্রেডেশন। উত্তর ঢাকাকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে স্মার্ট নেইবারহুড হিসেবে গড়ে তোলা, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পাড়া মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা। একটি সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার যার মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্মার্ট নেইবারহুড পরিচালনা ইত্যাদি সম্পন্ন হবে । তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সাংস্কৃতিক ও সেবাকেন্দ্র গঠন; যেখানে থাকবে হেল্প-ডেস্ক, ট্রেনিং সেন্টার, স্টার্ট-আপ কো-ওয়ার্কিং স্পেস, লাইব্রেরি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও অন্যান্য সুবিধা। নগরের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞের সহায়তায় সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ।

প্রতিটি এলাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলো আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতকরণ। সকল লেক-খালের সংস্কার, উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিয়ন্ত্রণ, পাবলিক স্পেস বৃদ্ধি করা ও টেকসই পরিবশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘জনতার মুখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়-এর মাধ্যমে ওয়ার্ড ভিত্তিক সমস্যার সমাধান। ইশতেহার ঘোষণার আগে আতিকুল বলেন, আমার প্রধান লক্ষ্য আনিস ভাইয়ের কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে কাউন্সিলরদের প্রত্যেক বছর সম্পদের হিসাব দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
লিখিত বক্তব্যে অতিকুল ইসলাম বলেন, ১১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ আলোয় উদ্ভাসিত। উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) পূরণে এক রোল মডেল। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় অংশ নিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আমি সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০২০-এ অংশ নিচ্ছি। তিনি বলেন, একটি শহরের প্রাণ হচ্ছে শহরের পাড়া ও মহল্লাগুলো। সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া ও মহল্লাকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। প্রতিটি এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করাটা অত্যন্ত জরুরি। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই নগরীর সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যার ফলে এই নগরীতে বসবাস করা মানুষগুলো সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আমার প্রধান লক্ষ্য, এই নগরীকে কেবল বসবাস উপযোগী নয়, বরং নগরবাসীর জীবনমানেরও উন্নতি সাধন করা। আওয়ামী লীগ মনোনীত এই মেয়রপ্রার্থী বলেন, নগরীর সার্বিক উন্নয়নে আমি কথা দিচ্ছি, আমাকে পুনরায় পূর্ণমেয়াদে নির্বাচিত কবলে লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো। সব উন্নয়ন অগ্রগতির সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে ঢাকা শহরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার সমস্যার সমাধান করে গড়বো সবার প্রিয় ঢাকা, যে ঢাকা আপনাদের সবার প্রাপ্য। আমি জানি শত সংকট, শত সীমাবদ্ধতা, নাগরিক যন্ত্রণাসহ নানাবিধ সমস্যা আছে এ শহরে। ঢাকা আপনার, আমার, সবার। আমাদের একটু সচেতনতা ও কিঞ্চিৎ সহযোগিতা এই নগরীর প্রাপ্য। যদি আমরা সবাই একটু সচেতন, আন্তরিক ও উদ্যোগী হয়ে দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত রাখি, শহর বিনির্মাণে অংশ নেই- তবে অবশ্যই ঢাকা উত্তরে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবেই। যার নেতৃত্বে থাকবে উত্তর ঢাকাবাসী।
ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী নাজমা আক্তার, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতা শফিউল আলম মহিউদ্দিন, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, চিত্রনায়ক রিয়াজ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড. মোহাম্মদ এ আরাফাত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর