× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আসামে বাংলাভাষী হিন্দুদের স্বপ্নভঙ্গ!

শেষের পাতা

মানবজমিন ডেস্ক
২৭ জানুয়ারি ২০২০, সোমবার

আসামে নতুন মেরুকরণ ঘটছে। বাংলাভাষী হিন্দুদের স্বপ্ন ভঙ্গ ঘটছে। তথাকথিত বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেয়া প্রসঙ্গে তিন শর্ত দিয়েছেন আসামের প্রভাবশালী অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এর মধ্যে রয়েছে, আবেদনকারীর ধর্মীয় পরিচয়, ২০১৪ সালের আগে ভারতে প্রবেশ ও বাংলাদেশি প্রমাণ করতে কোনো বাংলাদেশি নথি আসাম সরকারের কাছে জমা দেয়া। গত বৃহস্পতিবার আসাম রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চা আয়োজিত অনুষ্ঠানে হিমন্ত পরিষ্কার করেন যে, ওই তিন শর্ত পুরা না করলে বাংলাদেশি হিন্দু দাবিদার হলেই নাগরিকত্ব মিলছে না। তিনি প্রতিদিনই চমক উপহার দিচ্ছেন। বাংলাদেশি হিন্দু হলেই যে তাদের জন্য আসামের মাটিতে জামাই আদর নেই, সেটাই গত কিছুদিন ধরে উঠতে বসতে স্পষ্ট করে চলছেন তিনি। মি. হিমন্তকেই বলা হয় নাগরিকপুঞ্জি প্রবর্তনের প্রধান রূপকার।
গত সপ্তাহান্তে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশি হিন্দুরা নাগরিক হলেই বা কি হবে, তারা কখনো আসামের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবে না। গত বৃহস্পতিবার তিনি তো বোমা ফাটিয়েছেন। আগে তিনি এবং তার দলের প্রতিটি নেতা বলেছেন, নাগরিকপুঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের আওতায় ৫ লাখ হিন্দু নাগরিকত্ব পাবে। এখন তিনি সুর বদল করে বললেন, ওদের সংখ্যা তিন থেকে সাড়ে তিন লাখের বেশি হবে না। তাই আসামের গণমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড়। হিমন্ত প্রায় প্রতিদিনই খবরের কাগজগুলোর টপ শিরোনাম থাকছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মুসলিম বা হিন্দু বলে কোনো বিশেষ বাধন নেই ক্ষমতাসীনদের। রাজনীতি যেটা দরকার ছিল, সেখানে তারা স্কোর করে ফেলেছেন। সুতরাং প্রকৃত সমস্যা তারা সমাধানে আগ্রহী নয়। তারা এখন আবার ধর্মনিরপেক্ষ। তাই হিন্দু বলেই সহজে নাগরিকত্ব লাভের আশায় যারা বুক বেঁধেছিলেন তারা হতাশ। আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিধি আসবে। এই বিধি মেনে নাগরিকত্ব পাওয়া কঠিন হবে বলেই মনে করছেন অনেকে। দিনকয়েক আগে হিমন্ত আরো বলেছিলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় অত্যাচারের প্রমাণ দেয়া অসম্ভব। সেখানে তিনি এখন বলছেন, নাগরিকত্ব পেতে হলে কা-র অধীনে আবেদনকারীদের বাংলাদেশ থেকে আসা সরকারি কোনো তথ্য দিতে হবে। এদিকে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ বাংলাভাষী হিন্দুকে নাগরিক করার ফল অসমীয়া ভাষার উপর কীভাবে পড়বে সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। হিন্দু বাঙালি এবং মুসলমান বাংলাভাষীরা একজোট হলে অসমীয়া ভাষা কি নিঃশেষ হয়ে যাবে? এসব প্রশ্ন উঠে আসে ওইদিনের অনুষ্ঠানে। জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হিন্দু বাঙালি এবং বাংলাভাষীর মধ্যে বড়সড়ো ফারাক রয়েছে। অনেকের ধারণা, হিন্দু বাঙ্গালিরা কেবল বাংলায় কথা বলেন, এই ধারণা একেবারেই ভুল। ব্রহ্মপুত্রের কাছাকাছি থাকা অভিবাসী মুসলমানরা বাংলায় কথা বলেন। বাংলাভাষী মুসলমানের সংখ্যা আশি লাখের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। আর এতেই যত সমস্যা। হিমন্ত বলেন, বরাক সবাই বাংলায় কথা বলেন, এনিয়ে কোনো সমস্যা নেই।

ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় হিন্দু বাঙালির চেয়ে অভিবাসী বাঙালিরাই বাংলায় কথা বলে বেশি। হিমন্ত কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন যারা হিন্দু তারা বাংলা বলে না। বাংলা বলে যারা মুসলমান তারা। কলাগাছিয়া, দলগাঁও, চেংগা বাঘবর, জনিয়া , বরপেটা, গরইমারি , দক্ষিণ শালমারায় দেখা গেছে, হিন্দু বাঙালির সংখ্যা কমছে। কিন্তু অত্যধিক হারে বেড়েছে বাংলাভাষীর সংখ্যা। তার কথায়, অসমীয়া ভাষার যদি সংকট থাকে, তার অন্যতম কারণ হলো অভিবাসী মুসলমানরা বাংলায় কথা বলছে। আর এই সমস্যা মেটাতে রাজ্যে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে, যাতে তারা অসমীয়া পরিচয় দিতে বাধ্য হয়।

স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, হিমন্তের এই মন্তব্যটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ভাবে।
যুব মোর্চার ওই আলোচনায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল যোগ দিয়েছিলেন। তিনি এদিন বলেন, বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে যারা এ দেশে এসেছেন তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি বিজেপির নির্বাচনী এজেন্ডা ছিল। এনিয়ে কোন গোপনীয়তা রাখা হয়নি। এই এজন্ডা নিয়েই বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচনে গেছে এবং রাজ্যের মানুষ তাদের বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর