× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলাদেশি ‘বজরঙ্গী ভাইজান’

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) জানুয়ারি ২৯, ২০২০, বুধবার, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন

চলচ্চিত্রের কাহিনী থেকে যেন বাস্তব জীবন। হ্যাঁ, বাংলাদেশের মো. আরিফুল ইসলাম যেন হয়ে উঠেছেন ‘বজরঙ্গী ভাইজান’। পবন কুমার চতুর্বেদী হিসেবে নায়ক সালমান খান বলিউডের ‘বজরঙ্গী ভাইজান’-এ যেমন করে পাকিস্তানি এক বালিকাকে তার মায়ের কাছে ফেরত দিয়েছেন, ঠিক যেন একই রকম কাজ করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশি আরিফুল ইসলাম। মাত্র দু’দিনের ভিসা নিয়ে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় তন্ন তন্ন করে খুঁজেছেন একটি পরিবারকে। কেন? কারণ, এখন থেকে ১৪ বছর আগে তিনি আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপাড়ে ভারতীয় অংশের ভিতর থেকে উদ্ধার করেছিলেন ভারতীয় এক বোবা বালককে। তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর। ওই সময় সীমান্তের যে অংশে বেড়া ছিল না, সেখান দিয়ে তাকে নিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশে। বালকটিকে দেখে মানবিকতার টানে তাকে তুলে এনেছিলেন আরিফুল ইসলাম।
এখন ওই বালক ২৮ বছর বয়সী যুবক। আরিফুল তাই হন্যে হয়ে খুঁজছেন ওই যুবকের পরিবারকে। তাদের সন্ধান করতে গত সপ্তাহে বৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন ভারতে। কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে দেশে ফেরত আসতে হয়েছে। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই।

মো. আরিফুল ইসলামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার ছয়ঘড়িয়া গ্রামে। গত সপ্তাহে তাকে দেখা গেছে নদীয়ার হংসখালী এবং গেদে এলাকায় ২৮ বছর বয়সী একজন যুবকের ছবি হাতে নিয়ে ঘুরছেন। তিনি রাস্তায় রাস্তায়, দোকানে দোকানে, চায়ের স্টলে লোকজনকে তা দেখাচ্ছেন। জানতে চাইছেন কেউ তাকে চেনেন কিনা অথবা তার পরিবারের সন্ধান দিতে পারেন কিনা। কিন্তু কোনো কিনারা হয় নি। অগত্যা ২৪ শে জানুয়ারি দেশে ফেরত আসতে হয়েছে আরিফুলকে।

তার এ যাত্রায় ওইসব এলাকার দু’চারজন তাকে বলেছেন, গেদে এলাকার একটি গ্রাম থেকে ১৪ বছর আগে ১৪ বছর বয়সী একটি বালক হারিয়ে গিয়েছিল। এ খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছেন আরিফুল। সেখানে সংশ্লিষ্ট পরিবারটিকে ওই ছবি দেখিয়েছেন তিনি। কিন্তু পরিবারের কেউই ছবির যুবককে সনাক্ত করতে পারে নি। ফলে তারা বলে দিয়েছে, ওই যুবক তাদের ছেলে নয়।

উপায় না পেয়ে আরিফুল ওইসব এলাকার লোকজনের কাছে নিজের মোবাইল ফোন নম্বর ও ঠিকানা দিয়ে এসেছেন। এ সম্পর্কে আরিফুল বলেন, সে ১৪ বছর আগের কথা। তখন একদিন আমি কৃষিজমিতে কাজ করছিলাম। অকস্মাৎ দেখতে পাই একটি বালক একা একা দাঁড়িয়ে কাঁদছে সীমান্তে ভারতীয় অংশে। যেহেতু ওই সময় সেখানে সীমান্তে বেড়া ছিল না, তাই আমি দ্রুত তার কাছে ছুটে যাই। সে কথা বলতে পারতো না। এটা দেখে আমার খুব মায়া হয়। কিছু না ভেবে আমি তাকে বাড়ি নিয়ে আসি। পরে জানতে পারি, সে একজন হিন্দু। তা সত্ত্বেও সে আমার অন্য ছেলেদের মতো।

আরিফুল বলেছেন, তিনি ওই বালকটির পরিবারের সন্ধানে আরো আগেই যেতেন। কিন্তু তা পারেন নি। কারণ, ভারত যেতে হলে যে অর্থের প্রয়োজন তা তিনি যোগাড় করতে পারেন নি। আরিফুল বলেন, এখন ওই বালকটি আমার পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাকে ভারতে তার পরিবারের কাছে যেতে দেয়া আমাদের জন্য হবে কষ্টের। কিন্তু যেহেতু সে এখন যুবক, তাই তাকে তার পিতামাতার কাছে ফেরত পাঠানো আমার দায়িত্ব।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর