× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গাড়ল খামারি মাসুদ রানার সাফল্য

বাংলারজমিন

চাঁপাই নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
৩০ জানুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার

 চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিবনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মাসুদ রানা। মাত্র ৩১ বছর বয়সেই তিনি এখন আদর্শ উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন।
জানা গেছে, মো.মাসুদ রানা মার্কেটিং বিভাগ হতে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। এর পর নিজ বাড়ির পাশে একটি উন্নত জাতের গাড়ল খামার গড়ে তুলেন। প্রথমে ৪৪টি গাড়ল দিয়ে খামার শুরু করলেও এখন তার খামারে রয়েছে প্রায় শতাধিক গাড়ল। প্রতিনিয়তই তার খামারে বাড়ছে গাড়লের সংখ্যা। গাড়লের মাংস ও চামড়ার ব্যাপক চাহিদা থাকায় খরচের চাইতে অধিক দামে বিক্রি করতে পারেন তার খামারে পালিত গাড়ল।
উদ্যোক্তা মো. মাসুদ রানা জানান, মার্কেটিং বিভাগ হতে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করার পর চাকরির জন্য বেশ কিছু দপ্তরে যোগাযোগ করেন। এরপরেও চাকরি না হওয়ায় নিজেই গাড়ল খামার করার পরিকল্পনা করেন।
তিনি স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করে গাড়ল পালনের সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি জানান, গাড়ল পালনে তেমন খরচ হয় না। সঠিক নিয়মে পরিচর্যা ও দেখাশোনা করলেই বড় হয়। খামারের আশেপাশে ব্যাপক চারণভূমি থাকায় সারাদিন বাইরের খাবারেই বড় হয়। এ ছাড়া গাড়লগুলো শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ায় তাদের লালন পালনে তেমন বেগ পেতে হয় না। একেকটি গাড়ল ১৪ মাসে দুটি করে বাচ্চা দেয়। বাচ্চা ও বড় গাড়ল বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে চলে খামার খরচ ও দুই কর্মচারীর বেতন। ওই সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে মাসুদ রানার জমা হয় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তার জমানো টাকা দিয়ে শুরু করেছেন মধুমতি বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সেখানে উৎপাদিত হয়, তেল, আটা, খাতা, টিস্যু ব্যাগ, বিশুদ্ধ পানি, ব্যাটারির পানিসহ বিভিন্ন মসলার কারখানা। এ ছাড়াও তার রয়েছে মধুমতি হাট.কম নামে আরো একটি অনলাইন বাজার। যা চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলায় প্রথম। নিজেই গড়ে তুলেছেন বৃহৎ আকারের ছাপাখানা। ওই সব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার প্রায় সাড়ে ৪শ’ যুবক ও যুবতী। সীমান্তবর্তী এ জেলায় তার এমন কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা। আবার তাকে তরুণ প্রজন্মের আইকন হিসেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
মধুমতি বিজনেস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবদুল মতিন জানান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ রানার সার্বিক সহযোগিতায় এবং সাড়ে ৪শ’ কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রমে তার এমন সফলতা। তিনি আরো জানান, মালিক এবং সকল কর্মচারী সবাই অত্যন্ত আন্তরিকতায় কাজ করছি।
এমন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মো. মাসুদ রানা জানান, ধৈর্য, ইচ্ছা শক্তি সফলতার মূল কারণ। সকল কাজ আমি পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করি।
সম্প্রতি তার গাড়ল খামার ও ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করেছেন জাপানিজ জুজু ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিনিধি ইয়ে চাংচিং, ইয়েন গুয়োজো ও মো.আসাদ। তারা মো. মাসুদ রানাকে তরুণ সমাজের আয়কন হিসেবে উল্লেখ করে তার প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার আশ্বাস দেন।
গাড়ল পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রনজিৎ চন্দ্র সিংহ বলেন, গাড়ল পালন খুবই একটি লাভজনক পেশা। এখানে প্রচুর পরিমাণে চারণভূমি থাকায় মাঠ হতেই খাবার পাওয়া যায়। একটু যত্ন নিয়ে খামার তৈরি করলে অনেকেই লাভবান হবে। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ের কর্মী এবং আমি নিজেই খামারে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর