জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানার শেখানোর নামে নবীন শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনকারীদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অফিসে র্যাগিংয়ের রিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কারণে অনুষ্ঠিত র্যাগিং বিরোধী বিরোধী কমিটির সভায় প্রতিবেদনে সুপারিশের প্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা বোর্ড কর্তৃক তিনজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও অন্যান্য সকল কার্যক্রম রেখে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
বহিঃস্কৃত শিক্ষার্থীরা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী তোয়াবা নুশরাত মিম। যার রোল ঃ ১৯১২৪২৫১। অন্যজন হচ্ছে একই বিভাগের শায়রা তাসনিম আনিকা। রোলঃ ১৯১২৪২৫২। সর্বশেষ জন হচ্ছে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৌমিতা পারভিন। রোলঃ ১৯১১২৭০৮।
উল্লেখ্য যে,গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেকপোস্টের পাশে একটি ছাত্রীনিবাসে থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফারহানা রহমান লিয়োনাকে ম্যানার শেখানোর নামে মাত্রাতিরিক্ত নির্যাতন করা হয়।
ফলে মানসিক চাপে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যান তিনি। এসময় তাকে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় ।
এছাড়াও ধারাবাহিক র্যাগিং এর শিকার কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান গত বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞান হয়ে পড়ায় শরীরে খিঁচুনি শুরু হলে তাকে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন । বর্তমানে তিনি তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা যায় ।
র্যাগিং এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা । সাধারণ শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান দের যৌথ আয়োজনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের হয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, র্যাগিং এর শিকার সেই মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের প্রতি মানসিক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে । অন্যথায় আমরা আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবো ।
সকালের মানববন্ধন কর্মসূচির পর র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত তিন জন ছাত্রীকে একাডেমিক সহ সব ধরণের কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমনকি প্রায় প্রতিটি বিভাগ র্যাগিং সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না জানিয়ে নোটিশ জারি করে।