গত বছরের ৫ আগস্ট বাতিল করা হয় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্বশাসনের অধিকার। এরপর থেকে দীর্ঘদিন কার্যত অবরুদ্ধ ছিলো অঞ্চলটি। সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়া সেবাগুলো চালু হলেও এখনো সেটিকে একটি জেলখানা বলে মনে করছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)। কাশ্মীরের অবস্থা স্বাভাবিক বলে কেন্দ্র যে দাবি তুলছে তাও মানছে না বিজেপিবিরোধী এই রাজনৈতিক দলটি।
কাশ্মীরের স্বশাসনের অধিকার বাতিলের পর ভারতজুড়ে বড় দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে বড় ধরণের প্রতিবাদ দেখা যায়নি। কেউ বিষয়টি নিয়ে সরকারি নীতির সমালোচনা করলে তাকে পেতে হয়েছে দেশদ্রোহীর তকমা। তবে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টি প্রথম থেকেই মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলটির স্বায়ত্বশাসন বাতিল করার বিরুদ্ধে স্বরব ছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় দলটি আবারো কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বিজেপির দিকে আক্সগুল তুলেছে।
মঙ্গলবার দলটি দাবি করেছে, কাশ্মীর এখন খোলা জেলখানা।
কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, বিজেপি সরকার এখন দাবি করছে কাশ্মীর স্বাভাবিক। অথচ সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ছয় মাসের অচলাবস্থায় সেখানের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকার কমিউনিস্ট নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি বলেন, বিদেশি প্রতিনিধিদের কাশ্মীরে নিয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কি বোঝাতে চেয়েছেন কাশ্মীর স্বাভাবিক? অথচ বিরোধী নেতাদের কাশ্মীরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, কাশ্মীরকে খোলা জেলখানা ঘোষণা করে দিতে পারে সরকার। এটাই কাশ্মীরের বাস্তব অবস্থা। বসতঘর, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও অতিথিশালা পরিণত হয়েছে জেলখানা।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ৬ মাস কেটে গেছে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের। আর এই ৬ মাসে কাশ্মীরের পর্যটনশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশুপালন ও কৃষিশিল্প বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। সরকার রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে বলে দাবি করলেও সেখানকার নেতাদের এখনো পুরে রাখা হয়েছে জেলে। এখন সুপ্রিম কোর্টে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত মামলা চলছে। তিনি দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্টে মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত যেন সরকার সেখানকার জমি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত যেন না নেয়।