× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গাজীপুরে ইটভাটা গিলে খাচ্ছে ফসলের জমি

বাংলারজমিন

ইকবাল আহমদ সরকার, গাজীপুর থেকে
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার

সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে গাজীপুরে চলছে অবৈধ ইটভাটা। এ বিষয়ে সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশের পরও রাজধানীর পাশের এ জেলায় পুরোপুরি বন্ধ হয়নি অবৈধ ভাটা। সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় সবক’টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ হলেও আবারো চালু করতে মালিকরা দৌড়াচ্ছেন উচ্চ আদালতে। অন্যান্য উপজেলায় আইন-কানুনের তোয়াক্কা করছে অনেক ভাটা মালিক। আজ মোবাইল কোর্ট করে বন্ধের নির্দেশ দিলেও, কালই আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও আজ মোবাইল কোর্ট হলে আজই শুরু হয়ে যাচ্ছে ইট পোড়ানো। ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোও বন্ধ হয়নি। ফলে নানা দূষণের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
আর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকার কৃষক থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত। ভাটার কালো ধোঁয়ায় জেলার অনেক এলাকার আকাশ ভারি হয়ে উঠেছে। দূষণের কবলে পড়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও জনস্বাস্থ্য চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বিপর্যস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।

কোনো অবস্থায়ই ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো যাবে না, পরিবেশ অধিদপ্তরের দেয়া ছাড়পত্রে এমন শর্ত উল্লেখ থাকলেও জেলার কালিয়াকৈর, কাপাসিয়া, ও শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ইটভাটায় দেখা গেছে ভাটার মালিকরা শর্তের তোয়াক্কা করছেন না। কোনো কোনো ভাটার শ্রমিকরা জানায়, এমন ভাটাও রয়েছে যেখানে প্রতিদিনই কমপক্ষে ১০ টন কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, শত শত অবৈধ ভাটার পাশের গ্রামবাসী দূষণের কবলে পড়ে ফসল, ফল-ফলাদি হারিয়ে এবং নানা কষ্টে জীবন কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

ভাটার কালো ধোঁয়া, ছাই, ইটের গুঁড়া এবং ধুলা-বালির প্রকোপে গ্রাম-শহরের বাতাস দূষিত ও ভারি হয়ে পড়েছে। কাঠ পোড়ানোর কারণে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি মূল্যবান বিরল প্রজাতির উদ্ভিদও পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। অর্থলোভী ইটভাটার মালিকরা সরকারি নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে এবং প্রতিবেশ, পরিবেশ ও জনস্বার্থ উপেক্ষা করে আবাসিক এলাকা ও স্কুলের সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করে চালাচ্ছে ইটভাটা। এসব ভাটা উচ্ছেদের জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনে বার বার দাবি জানালেও তারা তেমন কোনো ফল পায়নি। গোটা বিশ্বের মানুষ যখন পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার, তখন রাজধানীর পাশের জনবহুল এ জেলার কর্মকর্তাদের ভূমিকা দেখে সবাই হতাশ। আর তা থেকে এক্ষুণি রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর।

ইটভাটার বিষয়ে হাইকোর্টের এক নির্দেশনার পর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু হলেও একেক এলাকায় একেক ধরনের শাস্তি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে। কোথাও কোথাও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে, পানি ঢেলে বন্ধ করা হচ্ছে। কোথাও আবার জরিমানার টাকা গুনেই অবৈধ ভাটা চালানোর সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন মালিকরা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটগণ বেশির ভাগ ভাটায় জরিমানা করছেন ৫ লাখ টাকা করে। জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ অবশ্য জরিমানার ক্ষেত্রে একটু সহনশীল মনোভাব দেখাচ্ছেন। ভাটার মালিকরা জরিমানার টাকা গুনে পরদিন থেকেই আবার অবৈধভাবে ভাটা চালাচ্ছেন কাপাসিয়াসহ বিভিন্নস্থানে। আবার কাপাসিয়া উপজেলার সম্মানিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এখনো অভিযান চালাতে পারেনি পরিবেশ অধিদপ্তর। যদিও কোনো কোনো এলাকায় দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

তবে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক আবদুস সালাম বলছেন, তারা নিয়মিত অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো এলাকার ভাটা মালিককেই কোনোভাবে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর