× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আহ্বায়ক কমিটিতে আটকে আছে সিলেট বিএনপি’র কার্যক্রম

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার

সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির বয়স সাড়ে ৪ মাস। সিলেটে দলকে শক্তিশালী করতে আগের গতিশীল কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু দ্রুত গতির পরিবর্তে কচ্ছপগতিতে চলছে সিলেট বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির কার্যক্রম। এখনো জেলা কমিটির অধিভুক্ত ১৮টি ইউনিটের পুরাতন কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে দলের নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। জেলার নেতারা বলছেন- পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে ইউনিটগুলোর পূর্ণাঙ আহবায়ক কমিটির গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ ইউনিটের আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সমাপ্ত করা হলেও ঘোষণা করা হয়নি। এক সঙ্গে সব ইউনিটের কমিটি গঠন করা হবে।
সিলেট জেলা বিএনপির পুরাতন কমিটি ভেঙে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয় গত বছরের অক্টোবরের প্রথম দিকে। নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের পরপরই সিলেটে ক্ষোভ দেখা দেয়। এতে অনেক সিনিয়র নেতাদের বাদ দেয়ায় এই ক্ষোভ দেখা দেয়। ক্ষোভের কারণে বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বিক্ষুব্ধ নেতাদের পক্ষ নেন। এরপর তারা ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা চালান। এই প্রক্রিয়া সফলও হয়। জেলা বিএনপির নতুন আহবায়ক করা হয় কামরুল হুদা জায়গীরদারকে। এই কমিটিতে পুরাতন কমিটির বেশির ভাগ নেতা রয়েছেন।

দায়িত্ব গ্রহণ করেই আহ্বায়ক কমিটি সিলেটের শাখা ইউনিটগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের পরামর্শ নিয়ে তারা নতুন করে আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চালান। সেই আঙ্গিকে প্রথমে তারা আহ্বায়কদের তালিকা প্রকাশের চেষ্টা চালান। এতে করে জেলা কমিটির আহ্বায়ক কমিটির কয়েক জন নেতার আপত্তির মুখে শেষে তার আর প্রকাশ করা হয়নি। এরপর সিদ্ধান্ত হয় ১৮ ইউনিটের এক সঙ্গে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করা হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও এ নিয়ে পরামর্শ নেওয়া হয়। জেলা বিএনপির নেতারা জানান- এবার নতুন করে বিশ্বনাথ পৌরসভা নামের আরো একটি ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের অনুমতি পাওয়া গেছে। এছাড়া আগের ১৭ ইউনিটকে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। তারা জানান- জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বিতর্কহীনভাবে কাজ করতে চায়। এ কারনে তৃণমূলের নেতাদের সকল ভেদাভেদ দূর করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এজন্য বিলম্ব বেশি হচ্ছে। একই সঙ্গে তদবিরও রয়েছে। এসব তদবিরের কারণে সব সমস্যার সমাধান ঘটিয়েই তবে ১৮ ইউনিটের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আহবায়ক কমিটির এক নেতা মানবজমিনকে জানিয়েছেন- আহবায়ক কমিটির ভেতরেই ঘোষিত কমিটি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে। এতে করে দেখা যাচ্ছে, কোথা কোথাও ভোট বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।

এসব বিষয় নিয়ে দলের ভেতরে বিতর্ক দেখা দিচ্ছে। এই বিতর্কের কারণেই কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে। তবে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আলী আহমদ জানিয়েছেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতারা বসে নেই। একটু ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু যে কাজ হচ্ছে সেটি নির্ভুল ভাবে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশাকরি সব মনোমানিল্য দূর করে প্রতিটি ইউনিটে শক্তিশালী আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে। ইতিমধ্যে অনেক কাজ এগিয়ে গেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এক কাজ শেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন- বিএনপি বড় দল। এ কারণে কাউকে বাইরে রেখে আমরা কিছুই করতে চাই না। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে দলের জন্য কাজ করা। এদিকে- সিলেট জেলা বিএনপি উপজেলা, পৌরসভার যে ইউনিটগুলো এখন গঠন করতে যাচ্ছে সেই ইউনিটগুলোর কাজ হবে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে সেই কাজগুলো হয় সে চেষ্টা চালাবে জেলা বিএনপির নেতারা। এজন্য তারা ইউনিটের নেতাদেরও সহযোগিতা করবেন। প্রয়োজনের জেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরাও মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন। সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আবদুল আহাদ খান জামাল জানিয়েছেন- দু’একটি ইউনিটের আহবায়ক কমিটি নিয়ে অভ্যন্তরীণ ভাবে কিছুটা ঝামেলা ছিলো। সেটি ইতিমধ্যে আমরা সমাধান করেছি। আশা করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ১৮টি ইউনিটের আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে। এরপর সেটি প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন- জেলার আহবায়ক কমিটির কাজে কোনো গাফলাতি হচ্ছে না। জেলার নেতারা আন্তরিক ভাবেই ইউনিটগুলো গঠনের কাজ করছেন। এদিকে- জেলা বিএনপির ইউনিটগুলোর আহবায়ক কমিটি গঠনের পর সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। এতে সহসাই জেলা বিএনপির সম্মেলন হচ্ছে না বলে ধারণা করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। তারা জানান- জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি মাঠ পর্যায়ে গোছানোর পর জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি নেবেন। তার আগে জেলায় হাত দেওয়া সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে আন্দোলনও চালাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে আন্দোলনকালে গত মাসে জেলার নেতারা নতুন করে মামলার আসামি হয়েছেন। তারা পলাতক থেকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিলেও আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি তারা আবার আদালতে হাজিরা দেবেন। ফলে মামলার কারনেও আহবায়ক কমিটি কিছুটা মন্থর হয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এমরান আহমদ জানিয়েছেন- কাজ হচ্ছে। খুব শিগগিরই তা দেখতে পাবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর