মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী রাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপে বসছে বাংলাদেশ। আগামীকাল ঢাকায় ওই সংলাপ হবে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ের ওই সংলাপে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, অভিবাসন, শিক্ষাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তবে সবচেয়ে শুরুত্ব পাবে শীর্ষ নেতৃত্বের সফর বিনিময় ও কাতারের জেলে থাকা বাংলাদেশিদের বন্দি মুক্তি এবং দেশে ফেরানোর বিষয়টি। কমপক্ষে ২৪০ জন বাংলাদেশি কাতারের জেলে রয়েছেন। বেশির ভাগই মানবপাচার ও মাদক চোরাচালান সংক্রান্ত মামলায় সাজা খাটছেন। তাদের মুক্তি এবং দেশে ফেরানোর বিষয়ে একটি সমঝোতা হওয়ার আভাস মিলেছে। তবে কয়েকজন মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বাংলাদেশি দোহার জেলে রয়েছেন, তাদের ফেরার সুযোগ বন্ধ।
দোহায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ জানিয়েছেনÑ সামগ্রিকভাবে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আরো জোরদার করতেই ওই রাজনৈতিক সংলাপের আয়োজন। সেখানে সম্পর্কের সব বিষয় নিয়েই কথা হবে। সেগুনবাগিচা বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরালো করার ধারাবাহিক প্রয়াসের অংশ হিসেবে কাতারের সঙ্গে এই প্রথম রাজনৈতিক পর্যায়ে সংলাপ হচ্ছে। গাল্ফ বা উপসাগরীয় অঞ্চলের ছয়টি রাষ্ট্রের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতা চায় ঢাকা। ভ্রাতৃপ্রতিম ওই দেশগুলোর নিজের মধ্যে যা-ই থাকুক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সবার বন্ধুত্ব রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ কমিশনের সভা হয় ঢাকায়। কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর দাবি করে ঢাকার এক কর্মকর্তা বলেন, কাতারে ২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের পর অদক্ষ শ্রমিকদের কাজের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়বে। তখন সেদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। কাতার নীতিগতভাবে ওই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। অভিবাসনের ক্ষেত্রে গত সপ্তাহে কর্মী পাঠানো সংক্রান্ত যৌথ কমিটির পঞ্চম সভা দোহাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে দক্ষ, আধা-দক্ষ ও বিশেষায়িত বাংলাদেশিদের সেখানে কাজ করার সুযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাতারে বর্তমানে কয়েক লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত আছেন। তাদের একটি অংশ ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের অবকাঠামো নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়নে আগ্রহী কাতার। অর্থ মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ নিয়ে আলোচনা করবে এবং কোন প্রকল্পে তারা অর্থায়ন করতে পারে, সেটি বাংলাদেশই ঠিক করবে। ঢাকা বলছে, জাতিসংঘে আসন্ন বেশ ক’টি নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি রয়েছে কাতারের। এসব নির্বাচনে তারা বাংলাদেশের সমর্থন প্রত্যাশী।