× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দক্ষিণখানে মা ও দুই সন্তানের লাশ গৃহকর্তাকে খুঁজছে পুলিশ

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার

ঢাকার দক্ষিণখানের একটি বাসা থেকে মা ও দুই সন্তানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গৃহকর্তাকে খুঁজছে পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা  তিনজনকেই হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহের তালিকায় রেখেছে গৃহকর্তা রাকিব উদ্দিন ভূঁইয়াকে। পুলিশ রাকিবকে খুঁজছে। পুলিশ বলছে, নিহত গৃহবধূ মুন্নীকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই সন্তানের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি হাতুড়িও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের ৮৩৮ নম্বর প্রেম বাগানের চতুর্থ তলার বাসা থেকে মুন্নী বেগম (৩৭) এবং তার দুই সন্তান ফারহান উদ্দিন (১২) ও  তিন বছর বয়সী লাইভা ভূঁইয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকেই ওই বাড়ির প্রতিবেশীরা বাতাসে ভেসে আসা পচা গন্ধ পাচ্ছিলেন। প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো মৃত পশু-পাখি থেকে গন্ধ আসছে। কিন্তু আশেপাশে খুঁজেও সেরকম কিছু পাওয়া যায়নি। তাই সন্দেহ বাড়তে থাকে। বাড়ির মালিকও বিষয়টিকে সহজভাবে নেননি। ওদিকে নিহত মুন্নীর ভাই সোহেল কয়েকদিন ধরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এতে করে সবার সন্দেহের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। শুক্রবার সকালে মুন্নীর ভাই তাদের খুঁজতে আসেন দক্ষিণখানের ওই বাসায়। এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান। পরে বাড়ির মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যান সোহেল ও বাড়ির মালিক। তারা দেখতে পান মুন্নী ও তার মেয়ে লাইভার মরদেহ একটি রুমের বিছানার ওপর পড়ে আছে। আর অন্য একটি কক্ষের মেঝেতে পড়ে আছে ছেলে ফারহান উদ্দিনের মরদেহ। এভাবে বিছানায় ও মেঝেতে তিনজনের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে খবর দেয়া হয় পুলিশকে। পরে দক্ষিণখান থানা পুলিশ এসে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মরদেহের ধরন দেখে   বোঝা যাচ্ছে জ্জ দিন আগে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি মরদেহে আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পর থেকে গৃহকর্তা রাকিব উদ্দিন ভূঁইয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সূত্র জানায়, পলাতক রাকিব উদ্দিন ভূঁইয়া বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড (বিটিসিএল) উপ-সহকারী প্রকৌশলী। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ভাতশালা এলাকার আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে। রাকিব ও মুন্নী সম্পর্কে খালাতো ভাইবোন। ১২ বছর আগে তারা দুজন প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তিন মাস আগে রাকিব একবার অপহরণ হয়েছিলেন। পরে অবশ্য আবার প্রকাশ্যে আসেন। কিন্তু তার অপহরণের বিষয়টিকে কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি। বিষয়টি রহস্যজনক ছিল। সম্প্রতি তিনি বিটিসিএলের গুলশান কার্যালয় থেকে উত্তরা কার্যালয়ে বদলি হন। যে বাসায় তার স্ত্রী-সন্তানের মরদেহগুলো পাওয়া গেছে ওই বাসায় প্রায় ১০ বছর ধরে তারা বসবাস করছিলেন।

মুন্নীর ভাই সোহেল বলেন, চারদিন ধরে আমি আমার বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। মোবাইলে কল দিলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। প্রথমদিকে মনে হয়েছিলো দূরে কোথাও ঘুরতে গিয়েছে। এক সময় মনে হলো ঘুরতে গেলেও দুজনের মোবাইল বন্ধ থাকার কথা না। পরে তাদের খুঁজতে বাসায় চলে আসি। এখানে এসে দেখি তাদের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। আর ভেতর থেকে পচা গন্ধ আসছে। পরে বাড়ির মালিককে নিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে মরদেহ দেখতে পাই।

দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা ঘরের ভেতর থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করেছি। তবে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। আমরা নিশ্চিত হয়েছি তাদের হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি হাতুড়ি উদ্ধার করেছি। নিহত মুন্নীর মাথায় হাতুড়ির আঘাত পাওয়া গেছে। তবে সেটিতে কোনো রক্তমাখা ছিল না। হয়তো ঘাতক রক্ত মুছে ফেলতে পারে। তিনি বলেন, তবে কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে সেটি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। গৃহকর্তা রাকিব উদ্দিনকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের সন্দেহ তাকে ঘিরে। পুলিশ ছাড়া, গোয়েন্দা সংস্থা, র‌্যাবের টিম তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় নিহত মুন্নীর ভাই সোহেল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর