× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বেড়িবাঁধ বদলে দিতে পারে গোয়াইনঘাটে কৃষির চিত্র

বাংলারজমিন

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

সিলেটের গোয়াইনঘাটে কৃষি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নে এবং কৃষি বান্ধব পরিবেশ সমুন্নত রাখতে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মসূচি চলছে। ফসল রক্ষায় বেড়িবাঁধ এবং ব্যাপক ফসল ফলনে কৃষকদের কল্যাণে দোরগোড়ায় থেকে সরকার বিনা মূল্যে রাসায়নিক সার, ব্রিজ বিভিন্ন ভর্তুকি, প্রণোদনা সহজ শর্তে কৃষি ঋণ, পানি সেচ ব্যবস্থাপনায় বিদ্যুৎ এবং সৌরশক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকদের সেচ প্রকল্প গড়ে তুলে দেয়াসহ ইতিবাচক নানা দৃষ্টান্ত বিদ্যমান রয়েছে। ৪৮৮.৬৮ বর্গকিলোমিটার আয়তন সম্পন্ন বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলার সমান আয়তনের ও ৩ লাখ ৫০ হাজার জনগোষ্ঠী নির্ভর গোয়াইনঘাট উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন হাওর-বাওরে পতিত থাকে হাজারো বিঘা কৃষি জমি। কোন কোন এলাকার এসব জমি শুকনো মৌসুমে রবি শস্য অথবা এক মৌসমে শুধু ইরি ফসল ফলানো হলেও দুই ফসলের আওতায় আনা যায় না অগণিত এলাকার জমি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলসৃষ্ট, অকাল বন্যা, অত্রাঞ্চলের ফসলহানির নেপথ্যে ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর কষ্ট করে শ’ শ’ কৃষকগণ গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন হাওরে ফসল ফলালেও অকাল বন্যার কারণে ফসলহানির মুখোমুখি হন তারা। যে কারণে গোয়াইনঘাটের হাওর বেষ্টিত এবং নিম্নাঞ্চলের চাষিরা কৃষি জমিতে শতভাগ ফসল ফলানো থেকে বাধ্য হয়ে বিরত থাকেন। অথচ এসব এলাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি থেকে ফসল এবং কৃষকদের রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে পারে একটি বেড়িবাঁধের প্রকল্প।
বন্যা নিয়ন্ত্রক বেড়িবাঁধ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে পানি আটকে বেড়িবাঁধের ভিতরে শুকনো এবং বর্ষা উভয় মৌসুমে ফসল ফলানোর উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। বেড়িবাঁধ সৃষ্টি হলে এলাকায় কৃষি আবাদের উন্নয়ন, পতিত জমি কৃষি আবাদের আওতায় নিয়ে আসা এবং বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে রাস্তা তৈরির মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থারও সহজতর সমাধান এবং উন্নয়ন ঘটাবে। এমনি সম্ভাবনাময় বেড়িবাঁধ প্রকল্প হতে পারে গোয়াইনঘাটের ৪নং লেঙ্গুঁড়া ইউনিয়নের শনিরগ্রাম মৌজাধীন শনিরগ্রাম হাওর এলাকারয়। ওই হাওরের হাজারো বিঘা পতিত ফসলি জমি একটি বেড়িবাঁধের মাধ্যমে চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব। এখানে সরকারের উদ্যোগে এই বেড়িবাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সিলেটের গোয়াইনঘাটে কৃষি বিপ্লবের অপার সম্ভাবনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন, কৃষিবিদ এবং এ খ্যাতে বিনিয়োগকারীরা। বৃহস্পতিবার সিলেট গোয়াইনঘাটের ৪নং লেঙ্গুঁড়া ইউনিয়নের শনিরগ্রামের হাওর পতিত জমিসহ পড়ে থাকা বিশাল হাওরের চিত্র সরজমিন পরিদর্শন কালে চোখে পড়ে সম্ভাবনাময় ফসল ফলানোর একটি ক্ষেত্রের চিত্র। এখানকার পড়ে থাকা শত শত বিঘা অলস ভূমি একটি বেড়িবাঁধ তৈরি করলে চাষাবাদের আওতায় চলে আসবে। পাশাপাশি বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে যোগাযোগ রক্ষাকারী সড়ক তৈরি করলেও এলাকাবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। সরজমিন পরিদর্শন কালে কথা হয় শনিরগ্রাম এলাকার আলিম উদ্দিন, জহির উদ্দিন, রশিদ আহমদ, শরিফ উদ্দিন, ময়নুল ইসলাম, সয়ফুল আলম, ফয়েজ উদ্দিন, আব্দুল মালিক ও শামিম আহমদসহ এলাকাবাসীর সাথে। এসব কৃষক জানান, প্রতি বছর এই শনির হাওরে পতিত হাজার বিঘা জমিতে তারা বুরো ফসল ফলিয়ে থাকেন। প্রতি বছরই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তাদের স্বপ্নের ফসল প্রাপ্তির আনন্দ পেয়ে বিনষ্ট করে দেয়। তারা দ্রুত শনিরহাওর ঘিরে একটি বেড়িবাঁধ প্রকল্প গ্রহণ করে অত্রাঞ্চলের কৃষির সম্ভাবনার হাতছানিকে বাস্তবায়িত করার দাবি জানান। আলিম উদ্দিন নামক এক যুবক বলেন, বেড়িবাঁধ প্রকল্প গ্রহণ সাপেক্ষ এখানকার পতিত হাজার বিঘা জমি ফলনের আওতায় নিয়ে আসলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত ফসল সিলেটসহ অন্যান্য স্থানেও সরবরাহ করা সম্ভব। এতে করে কৃষকদের পাশাপাশি সরকারও লাভবান হবেন। গোয়াইনঘাটের উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সুলতান আলী জানান, বেড়িবাঁধ প্রকল্পের মাধ্যমে যেকোনো এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটানো যায়। গোয়াইনঘাটের শনির হাওর এলাকায় এমন একটি বেড়িবাঁধ হলে অকাল বন্যা থেকে ফসল হানির ঘটানো হ্রাস করা সম্ভব হবে। গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, গোয়াইনঘাটের যেকোন স্থানে কৃষকদের যেকোনো কল্যাণে সরকার আন্তরিক। তাদের যেকোনো সমস্যায় সরকার ও প্রশাসন পাশে থাকবে। শনির হাওর এলাকায় যদি বেড়িবাঁধ প্রকল্প গ্রহণ করে কৃষক এবং এলাকাবাসীর উপকার হয় তাহলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর