× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কসবায় গ্যাসের উদ্‌গীরণ, মুখে দেয়া হচ্ছে বালি

বাংলারজমিন

জাবেদ রহিম বিজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

গ্যাস পাওয়ার আশা পূরণ হয়নি। উদ্‌গীরণের মুখে দেয়া হচ্ছে বালি চাপা। তবে এর ধ্বংসলীলা এখন দৃশ্যমান। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। দূর হয়নি আতঙ্ক। দূর-দূরান্ত থেকে উৎসুক লোকজন এখনো ছুটে আসছেন সেখানে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার বিদ্যানগরে শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে নলকূপ বসাতে করা বোরিংয়ের মুখ দিয়ে বালি, পানি ও গ্যাসের উত্তাল উদ্‌গীরণ আশা জাগিয়েছিল গ্যাস পাওয়ার। কিন্তু উদগীরণ থেমে যাওয়ায় চাপা পড়েছে স্বপ্ন।
তবে এতে সৃষ্ট বড় এক খাদ হয়ে উঠেছে ধ্বংসলীলার স্বাক্ষর। সেটি বালি ফেলে ভরাট করার কাজ শুরু হয়েছে। নিরাপত্তার জন্যে টিন দিয়ে ওই জায়গা ঘিরে দেয়া হয়েছে বেষ্টনী। বিদ্যালয়ে ক্লাসও শুরু হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে ক্লাস নেয়া বন্ধ থাকায় একটি ভবনেই বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস চালানো হচ্ছে পালা করে। তবে আতঙ্ক দূর না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। বিদ্যালয়ের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কীভাবে মিটবে সেই ভাবনায় পড়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়টিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাদ্দকৃত একটি গভীর নলকূপ বসাতে বোরিং করা শেষে এর মুখ দিয়ে গ্যাস, পানি ও বালি উদগীরণ শুরু হয় প্রচণ্ড বেগে। ২রা ফেব্রুয়ারি সকালের এই ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। গ্যাস পাওয়া গেছে বলে হৈ চৈ পড়ে যায় চারদিকে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। লাল নিশান দিয়ে এর আশেপাশে বেষ্টনী দিয়ে দেন। এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করা হয় সবাইকে। ছুটে আসেন বাপেক্সের কর্মকর্তারাও। নমুনা সংগ্রহ করে ফিরে যান ঢাকায়। ৭২ ঘণ্টা পর এই উদগীরণের কারণ জানানোর কথা বলে যান তারা। কিন্তু তার আগেই ৫ই ফেব্রুয়ারি বিকালে স্থির হয়ে যায় উদগীরণ মুখ। ওই ঘটনার পরই বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিদ্যালয়। এর ১০ দিন পর ১১ই ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ক্লাস। তবে নানা সমস্যা ও আতঙ্কের কথা জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সরজমিন দেখা গেছে বালি-পানি আর গ্যাস উদগীরণে সৃষ্ট হয়েছে বড় এক খাদ। যা বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের পাকা ভবনের ভিতের অংশও ফোকলা করে দিয়েছে। বেসামাল উদগীরণে এই খাদের গর্ভে বিলীন হয়েছে শহীদ মিনার, ভবন লাগোয়া টয়লেটের ট্যাঙ্কি। পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর। উপড়ে পড়েছে গাছ। বালি উপচে সয়লাব হয়েছে বিদ্যালয়ের মাঠ। যার উচ্চতা প্রায় ৩ ফুট। বালির স্তর পড়েছে উত্তর দিকের টিনসেড ঘরের শ্রেণিকক্ষেও। ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে খাদটি ভরাটের কাজ শুরু করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সামান্য আকারে বুদবুদের মধ্যেই ৪ জন শ্রমিক জমাট হওয়া বালি কেটে এনে ফেলছিলেন সেখানে। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন গাছের ডালপালাও কেটে ফেলা হচ্ছিল খাদে। তার আগে খাদের চারপাশে প্রশাসন থেকে দেয়া টিনে বেষ্টনী দেয়া হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল মামুন ভূঁইয়া বলেন- বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকার মানুষের মধ্যে যে ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করার জন্য খাদটি ভরাট করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপরও নিরাপত্তার জন্য ওই জায়গাটিতে টিনের বেষ্টনী দেয়া হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রত্যেকটিতেই দুটি করে শাখা রয়েছে জানিয়ে বলেন- ভবনের ক্ষয়ক্ষতির কারণে তারা এখন একটি ভবনে পালাক্রমে এসব শ্রেণির ক্লাস করাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পুনর্নির্মাণ, ভেঙে পড়া শহীদ মিনার, পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং টয়লেট নির্মাণসহ বিভিন্ন সমস্যা নিরসনের দাবি জানান প্রধান শিক্ষক। বালি-পানি ও গ্যাসের তাণ্ডবে বিদ্যালয় ছাড়াও আশেপাশের জমি ও পুকুরের মাছ নষ্ট হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা বলে জানান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর