× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চলে গেলেন তাপস পাল

বিনোদন

কলকাতা প্রতিনিধি
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার

বাংলা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ও প্রাক্তন সংসদ সদস্য তাপস পাল আর নেই। মঙ্গলবার ভোরে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই স্নায়ু এবং রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। চলছিল নিয়মিত চিকিৎসাও। সমপ্রতি মুম্বই গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে হঠাৎই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভর্তি করা হয় মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে।
১লা ফেব্রুয়ারি থেকে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ায় ৬ই ফেব্রুয়ারি ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হয় তাকে। সোমবার তার কলকাতা ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু মুম্বই বিমানবন্দরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার ভোররাত ৩টা ৩৫ নাগাদ মারা যান এ অভিনেতা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া টালিউডে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজনীতি এবং চলচ্চিত্রের অপূরণীয় ক্ষতি হলো তাপস পালের বিদায়ে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন্‌ পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বলেছেন, ওর প্রজন্মের অন্যতম সেরা অভিনেতা ছিল তাপস। ওকে ঠিকমতো ব্যবহার করা হলো না। এই আফসোস থেকে যাবে চিরকাল।

বাংলা চলচ্চিত্রে তাপস পাল হয়ে উঠেছিলেন পাশের বাড়ির ছেলে। আর তাই  নিপাট সারল্যের পাশাপাশি ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছে বীরত্ব প্রদর্শন করে নায়িকাকে উদ্ধার করার মতো একের পর এক  দৃশ্যে সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে তাপস পাল অভিনেতা থেকে স্টার হয়ে উঠেছিলেন। তপন সিংহ থেকে অঞ্জন চৌধুরী, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় থেকে তরুণ মজুমদার, এমন বহু খ্যাতনামা পরিচালকের চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।  আশি থেকে নব্বই দশকের বাংলা চলচ্চিত্রে প্রেম, অভিমান, অনুরাগ এবং লড়াইয়ের সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছিলেন তাপস। ‘দাদার কীর্তি’ দিয়ে অভিনয়ের সূচনা হয়েছিল তার। এরপর ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, ‘সুরের আকাশ’, ‘সমাপ্তি’, ‘চোখের আলো’, ‘অন্তরঙ্গ’, ‘সুরের ভুবনে’, ‘মায়া মমতা’, ‘সাহেব’,  ‘পর্বতপ্রিয়, ‘দিপার প্রেম, ‘মেজ বউ, ‘পথভোলা, ‘আশীর্বাদ, ‘পরশমণি, ‘শুধু ভালোবাসা’সহ তার সিনেমার তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। শেষের দিকে দেবের কয়েকটি সিনেমাতেও দেখা যায় তাকে। দেবশ্রী রায়, শতাব্দী রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে একাধিক সফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘উত্তরা’ বা ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ ছবিতে তাপস অসামান্য অভিনয় করেছিলেন। কলকাতা তো বটেই, ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসেও এক উল্লেখযোগ্য নাম তাপস পাল। অভিনয় করেছেন বলিউডের সিনেমাতেও। মাধুরী দীক্ষিতের প্রথম ছবিতে নায়ক ছিলেন তাপস। ১৯৮৪ সালে মাধুরীর বিপরীতে ‘অবোধ’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। ওই ছবিতে তাপস পাল মাধুরীর স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ছবিটিতে মাধুরীর চরিত্রের নাম ছিল গৌরী আর তাপস পালের নাম ছিল শঙ্কর। অভিনয়ের পাশাপাশি এক সময় রাজনীতিতেও হাজির হয়েছিলেন তাপস পাল।

২০০৯ সালে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এই সময় থেকেই নানা কুকথার জেরে তিনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরে চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় তাকে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি চিট ফান্ডে আর্থিক তছরুপ ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দীর্ঘ সময় কারাগারেও থাকতে হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শেষদিকে। ফলে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। শেষদিকে রাজনীতি থেকেও সরে এসেছিলেন। তবে অভিনয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এদিকে সবশেষ জানা গেছে, আজ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাপস পালের শেষকৃত্য হওয়ার কথা। এর আগে তার দেহ শায়িত থাকবে রবীন্দ্র-সদনে। সেখানে অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানাবেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর