× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঢাকার ১৬ ওয়ার্ডে আজ থেকে কলেরা টিকা ক্যাম্পেইন

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার

রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগ ও লালবাগ এলাকাকে কলেরা প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কলেরা প্রবণ এলাকা মোহাম্মদপুর। সিটি করপোরেশনরে এই ছয়টি থানার ১৬টি ওয়ার্ডে শুরু হচ্ছে এক বছরের বেশি বয়সী সবার জন্য কলেরার টিকা খাওয়ানোর ক্যাম্পেইন। বিনামূল্যে টিকা খাওয়ানোর এ কার্যক্রম চলবে ২৫শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এসব এলাকায় ৬ দিনব্যাপী ৩৬০টি টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্তা টিকাদান কর্মসূচি চলমান থাকবে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এসময় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌসী এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ’র (আইসিডিডিআর,বি)  সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. ফেরদৌসী কাদরী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে-দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, গ্যাভি-এর আর্থিক সহায়তায় এই টিকাদান উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে শাহলীনা ফেরদৌসী বলেন, কলেরা একটি প্রাচীন খাদ্য ও পানি বাহিত রোগ যার প্রাদুর্ভাব গঙ্গা বদ্বীপ থেকে শুরু করে ইউরোপ ও আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত। বর্তমানে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকার ৪৭টি দেশ কলেরায় আক্রান্ত হয়। যেসব এলাকায় নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা রয়েছে সেখানে কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। কলেরা একটি ডায়রিয়াজাতীয় রোগ যা দেহে দ্রুত পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে এবং সময়মতো চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ১৩ থেকে ৪০ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশসহ আটটি উন্নয়নশীল দেশে বছরে প্রায় এক লাখেরও বেশি মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগ ও লালবাগ এলাকার ১৬টি ওয়ার্ডে (ওয়ার্ড নং ৯, ১০, ১৪, ২২-২৫, ২৯-৩৪, ৫৫-৫৭) ১৯ থেকে ২৫শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুখে খাওয়ানোর কলেরা টিকাদান কার্যক্রম  বাস্তবায়নের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এসব এলাকায় ৬ দিনব্যাপী ৩৬০টি টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। কর্মজীবীদের সুবিধার্থে কিছু টিকাদান কেন্দ্র সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য অর্জিত হবে। কলেরা টিকা গ্রহণে ডায়রিয়া ও কলেরার প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০৩০ সালের মধ্যে কলেরা নির্মূলের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা বাংলাদেশের জন্য কলেরা কন্ট্রোল প্ল্যান ২০১৯-২০৩০ গ্রহণ করে, যেখানে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি কলেরা টিকাদানকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল টাস্কফোর্স অন কলেরা কন্ট্রোল (জিটিএফসিসি)-এর মাধ্যমে ইউনিসেফের সহায়তায় চব্বিশ লাখ মুখে খাওয়ার কলেরা টিকা সংগ্রহ করা হয়েছে, যা একমাস অন্তর অন্তর ২টি ডোজের মাধ্যমে একবছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সীদেরকে প্রদান করা হবে। বাংলাদেশের সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি এবং ঢাকা সিটি করপোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ)-এর সহায়তায় আইসিডিডিআরবি এই টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলোজিক্স কোম্পানি লিমিটেডের তৈরি ইউভিকল প্লাস নামের মুখে খাওয়ার এই কলেরা টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনপ্রাপ্ত ও নিরাপদ।  রাজধানীতে আরো অনেক থানা  থাকতে এই ৬টিকে কেন এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হলো? এ প্রশ্নের উত্তরে ড. ফেরদৌস কাদরী বলেন, আইসিডিডিআরবিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের গত ৫ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এই এলাকাগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যারা মহাখালী কলেরা হাসপাতালে আসে তাদের মধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকার প্রতি হাজার রোগীর ভেতর ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, আদাবর এলাকায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ, দারুস সালাম এলাকার দশমিক ৩ শতাংশ, লালবাগ এলাকার ২ দশমিক ১ শতাংশ, কামরাঙ্গীরচর এলাকার ১ দশমিক ৫ শতাংশ, হাজারীবাগ এলাকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ রোগী কলেরায় আক্রান্ত। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকার ৬টি এলাকায় শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে ঢাকার কলেরা প্রবণ অন্যান্য এলাকা এবং সারা বাংলাদেশের কলেরা প্রবণ এলাকাতেও এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর