কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ায় নবজাতক শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে এক পাষণ্ড মা। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের শতগ্রাম ইউনিয়নের নোহাইল গ্রামে। সোমবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে এবং ঘাতক মা কোহিনুর বেগমকে (২৫) আটক করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ বছর আগে উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের নোহাইল গ্রামের মো. আলালের ছেলে মো. আবদুর রশিদের সঙ্গে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের খামার খড়িকাদম গ্রামের মো. সুলতান আলীর মেয়ে মোসা. কোহিনুর বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তার বয়স এখন ২ বছর। গত সোমবার দুপুরে কোহিনুর বেগমের কোলজুড়ে আসে আরেকটি কন্যাসন্তান। তার মনের বাসনা ছিলো- এই সন্তানটি তার ছেলে হবে। কিন্তু মেয়ে হওয়ায় শিশুটিকে পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

কোহিনুর বেগমের স্বামী মো. আবদুর রশিদ জানান, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাড়িতে স্বাভাবিকভাবে তার স্ত্রী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। স্ত্রী-কন্যা সুস্থ ছিলো। বিকালে তিনি পাশের অর্জুনাহার বাজারে যান। রাত ৮টায় ফিরে এসে দেখেন ঘরে নবজাতকসহ কন্যা ও স্ত্রী নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশে উত্তর দিকে একটি পুকুরের পানিতে শিশুটিকে ভেসে থাকা অবস্থায় দেখতে পান।

বীরগঞ্জ থানার এসআই নিমাই কুমার রায় জানান, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জানতে পারি যে মা-সহ একটি নবজাতক নিখোঁজ হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক কর্মকর্তাসহ রাত ১২টায় ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করি এবং ঘাতক কোহিনুর বেগমকে আটক করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।

বীরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নবী হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কন্যাসন্তানের প্রতি বিরাগভাজন হয়ে মা তার নবজাতক কন্যাকে হত্যা করে। নবজাতকের মৃতদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নবজাতকের বাবা বাদী হয় কোহিনুর বেগমকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।