মিনুবালা ৭১’ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হারিয়েছেন একমাত্র ছেলে ও স্বামীকে। ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মিয়া পাড়া এলাকার বাঁধে। বিয়ের পর মেয়ে চলে যায় স্বামীর বাাড়িতে। অসহায় মিনুবালা অন্যের বাড়িতে কাজ করে দিনাপাত করতেন এখন বয়সের ভারে কাজ করতে না পারায় সারাদিন ভিক্ষা করে বাঁধের ধারে একটি ছোট্ট ঘরে সংসার পেতে দিনযাপন করছিল। হঠাতেই নোটিশ আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশ আর ভয়ে শেষ আশ্রয়স্থল থেকে ঘর ভেঙে নিলেও উপায় না থাকায় বাঁধের কিনারায় দিনে চৌকির উপরে ও রাতে চৌকির নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। একই স্থানে মৃত আমাতুল্লাহ এর স্ত্রী বোলো বেওয়া খোলা আকাশের নিচে অতি কষ্টে দিন পার করছিলেন। স্বামী হারা এই বৃদ্ধার ছিল না কোনো সন্তান অন্যের নিকট হাত পাতা বা বাড়ি বাড়ি কাজ করেই দিন কাটতেন তবুও রাতে একটি ঠাঁই ছিল বাঁধের ধারে একটি ঘর সেটিও ভেঙে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে গত সোমবার বিকালে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এডব্লিউএম রায়হান শাহ্ রমনা মিয়া পাড়া বাঁধ এলাকায় ধ্বংসস্তূপের পাশে আশ্রয় নেয়া মিনুবালা ও বোলো বেওয়ার খোঁজ নেন এবং তাদের সরকারিভাবে ঘর করে দেয়াসহ বয়স্ক ভাতার কার্ডও করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় সংশ্লিষ্ট রমনা মডেল ইউপি চেয়ারম্যান আজগর আলী উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিশ্রুতি পেয়ে মিনুবালা ও বোলো বেওয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠে। চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এডব্লিউএম রায়হান শাহ্ বলেন, মিনুবালা ও বোলো বেওয়ার মত অসহায় যে পরিবারগুলো রয়েছে যাদের যাওয়া এবং থাকার জায়গা নেই তাদের পর্যায়ক্রমে খাসজমি-আবাসনসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি সহায়তার আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে। উল্লেখ্য মিনুবালা ও বোলো বেওয়া বারবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অবশেষে প্রায় ৪৫ বছর ধরে ওয়াপদা বাঁধে আশ্রয় নিয়ে সংসার গড়ে ছিলেন।