খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামালকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হত্যা, মাদক, অস্ত্রসহ ৪টি মামলায় বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দ বাগচি শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। এরপর তাকে খুলনা জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ ১৮টি মামলা মামলা রয়েছে বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন।
রূপসায় সারজিল ইসলাম সংগ্রাম (২৮) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামালকে গ্রেপ্তারের জন্য গত ২৭ নভেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব-৬) তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তার বাসা থেকে ১৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ১ রাউন্ড ওয়ান শ্যুটার গানের গুলি, ১ রাউন্ড ওয়ান শুটারগানের খালি খোসা, ৫ বোতল ফেন্সিডিল, ৩ বোতল বিদেশি হুইস্কি, ৬ প্যাকেট আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশি সিগারেটসহ মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামালের সহযোগী মো. মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামের ব্রাইট সি ফুডসের কম্পিউটার অপারেটর সারজিল ইসলাম সংগ্রামকে গত বছরের ২৬শে সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টায় অফিস থেকে ডেকে নিয়ে হিমায়ন বরফ কলের পাশে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
জেলা ডিবি পুলিশ মামলার তদন্ত করে আসামি রাহাত শিকদার, সোহেল হাওলাদার, অমিত শেখ, সাজু, রনধর, আদম শেখ, সুমন মোল্লা, বায়েজিদ সরদার ও আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে।
গত ১৪ই অক্টোবর রূপসা উপজেলার মৃত আনোয়ার আলী শেখের ছেলে আসামি আদম শেখকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে এ হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী চেয়ারম্যান মিনা কামালের নাম। পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যা মিশনে ব্যবহৃত ৩টি চাপাতি ও ৩টি ছোরা ও ভিকটিম সারজিল ইসলাম সংগ্রামের ১টি মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পুলিশের ভাষ্যমতে, হত্যামিশনে অংশ নেয়া ৭ জন আসামি এবং হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত আরো ২ জন। মিনা কামাল রূপসাসহ খুলনার বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে ‘ফাটাকেষ্ট’ নামে পরিচিত।