× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দৌলতদিয়ায় আরেক যৌনকর্মীর লাশ দাফন

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শনিবার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট উপজেলার যৌনপল্লীর কেউ মারা গেলে তাদের পানিতে ভাসিয়ে দেয়া বা মাটিচাপা দেয়া হতো। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই প্রথা ভেঙে দিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান। গত ২রা ফেব্রুয়ারি এক যৌনকর্মী মারা যাওয়ার পর তার লাশ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফনের ব্যবস্থা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় আবারো আরেক যৌনকর্মী রিনা বেগমের জানাজার নামাজ ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী দাফন হয় সেখানে। গত বৃহস্প?তিবার রাত ১০টার দিকে দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর পাশে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে পল্লীর নির্দিষ্ট কবরস্থানে দাফন করা হয়। রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পিপিএম বারের উদ্যোগে গোয়ালন্দ থানা জামে মসজিদের ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিক এ জানাজার নামাজ পড়ান। বৃহস্পতিবার বিকালে রিনা বেগম নামের এক যৌনকর্মীর মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের দৃষ্টিতে আসে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ওই যৌনকর্মীর জানাজা নামাজের উদ্দ্যোগ নেন। কিন্তু যৌনকর্মী বলে স্থানীয় কোনো ইমাম তার জানাজা পড়াতে রাজি হননি। তাই গোয়ালন্দ ঘাট থানা মসজিদের ইমামকে সঙ্গে নিয়ে জানাজার নামাজ পড়ানোর ব্যবস্থা করেন। জানাজার নামাজে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পিপিএম বার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির আবদুল জব্বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান, দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান মণ্ডলসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। এর আগে চলতি মাসের ২রা ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথমবারের মতো দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর যৌনকর্মী হামিদা বেগমের মৃত্যুর পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই নামাজের পর স্থানীয় ও দেশি-বিদেশি মিডিয়া ফলাওকরে বিষয়টি তুলে ধরে এবং এই  ধারা অব্যাহত থাকা নিয়ে  জনমনে নানা প্রশ্ন জাগে। দ্বিতীয় যৌনকর্মীর জানাজার মাধ্যমে সে সংশয় অনেকটাই কেটে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, আল্লাহ সর্বশক্তিমান, আল্লাহ ক্ষমাশীল। একজন মানুষের শেষকৃত্য হওয়ার যে সুযোগ সামাজিক কারণে সেটি যদি না দেই, তাহলে মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি অবিচার করা হবে। সেই আলোকে প্রথম কোনো যৌনকর্মীর জানাজা শেষে আজ দ্বিতীয় যৌনকর্মীর জানাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। দৌলতদিয়া পূর্বপাড়া যৌনপল্লীর ‘অসহায় নারী ঐক্য সংগঠন’ এর সভানেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, আগে এখানে কেউ মারা গেলে তাকে নদীতে ভাসানো বা মাটিচাপা দেয়া হতো। এখানকার বেশিরভাগ নারীই মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমরা মারা গেলে যেন জানাজা আর দাফন হয় প্রশাসনের কাছে এমন দাবি জানিয়ে আসছিলাম। সেই দাবি মেনে এখন আমাদের জানাজার ব্যবস্থা হয়েছে, এটা ভাগ্যের ব্যাপার। আমরা যে কেউ মারা গেলে থানায় খবর দেই। আমাদের কেউ মারা গেলে এখন প্রশাসনের সহযোগিতায় ধর্মীয়ভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর