× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নিকলীতে ফুটন্ত তেলে যুবককে ঝলসে দিলেন ইউপি সদস্য

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার

 কিশোরগঞ্জের নিকলীতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে এক ইউপি সদস্য ফুটন্ত তেলের কড়াইয়ে ফেলে মো. খলিল মিয়া (৩৫) নামে এক যুবককে ঝলসে দিয়েছেন। যুবকের ডান হাত-পাসহ শরীরের প্রায় অর্ধেক অংশ ঝলসে গেলেও অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়িতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। দগ্ধ খলিল মিয়া উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে। তিনি বিভিন্ন হাটবাজারে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে ডালের বড়া বিক্রি করেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম শিশু মিয়া। তিনি উপজেলার গুরুই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য এবং গুরুই পূর্বপাড়ার মৃত শহর আলীর ছেলে।
দগ্ধ মো. খলিল মিয়া জানান, গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি গুরুই শাহী মসজিদের মেলায় তিনি সিদ্ধ ডিম ও ডালের বড়া বিক্রির অস্থায়ী দোকান দিয়েছিলেন। রাতে ইউপি সদস্য শিশু মিয়া তার দোকানে এসে ডালে মরিচ নাই কেন জিজ্ঞেস করে গালিগালাজ শুরু করেন। মরিচ শেষ হয়ে গেছে বলে জানালে ইউপি সদস্য আরো ক্ষিপ্ত হন।
এক পর্যায়ে তাকে লাথি মেরে ফুটন্ত তেলের কড়াইয়ে ফেলে দেন। এতে তার ডান হাত, ডান পা ও মুখের ডান পাশ ঝলসে যায়। এ সময় তিনি চিৎকার করলেও ইউপি সদস্যের ভয়ে কেউ তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে যায়নি। ইউপি সদস্য শিশু মিয়া চলে যাওয়ার পর একজন গ্রামপুলিশ তাকে বাড়ি পৌঁচ্ছে দেন। পরদিন ১৯শে ফেব্রুয়ারি তিনি বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সাময়িক চিকিৎসা নেন। অর্থাভাবে সেখানে চিকিৎসা শেষ না করেই নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। কিন্তু ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য না থাকায় নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। এখন বাড়িতেই যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। দগ্ধ মো. খলিল মিয়ার স্ত্রী নূরুন্নাহার জানান, স্বামীর আয়েই তাদের পরিবারের ৮ সদস্যের সংসার চলে। স্বামীর এই অবস্থায় এখন চিকিৎসা দূরে থাক তাদের সংসারই চলছে মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায়।
খলিলের বৃদ্ধা মা রোকেয়া আক্তার জানান, ভিটেমাটিটুকু ছাড়া তাদের আর কোনো সহায়-সম্বল নেই। ছেলে খলিল হাটবাজারে সিদ্ধ ডিম আর ডালের বড়া বিক্রি করে সংসার চালায়। তার উপার্জনক্ষম ছেলেটি এখন শরীরে পোড়া ক্ষত নিয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করে দিন কাটাচ্ছে। মা হয়ে ছেলের এই কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারছেন না বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন রোকেয়া আক্তার।
এ ব্যাপারে গুরুই ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের জানান, বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তারা বসেছিলেন। খলিল মিয়ার চিকিৎসার খরচ ও সংসার চালানোর খরচ ইউপি সদস্য শিশু মিয়া বহন করবেন এ রকম সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্যে ৭ হাজার টাকাও খলিলকে দেয়া হয়েছে। আর শুরু থেকেই খলিলকে চিকিৎসাসহ সার্বিকভাবে দেখাশোনা করছেন ইউপি সদস্যের বড় ভাই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর