× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অভিবাসন নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের দাবি যাচাই বিবিসি’র

দেশ বিদেশ

মানবজমিন ডেস্ক
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রবিবার

নাগরিকত্ব বিল সংশোধনী নিয়ে ভারতে চলমান বিতর্কের মধ্যেই দেশটির সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, ভারত যদি অবৈধভাবে প্রবেশ করা সকলকে নাগরিকত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বাংলাদেশের অর্ধেক ফাঁকা হয়ে যাবে। বাংলাদেশ সরকার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছে যে, যখন অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে ভালো করছে, তাহলে কেন কেউ ভারতে যেতে চাইবে? এসবের প্রেক্ষিতেই বিবিসি’র ফ্যাক্টচেকিং টিম বা তথ্য যাচাইকারী দল দুই দেশের দাবিসমূহ যাচাইয়ের চেষ্টা করেছে।
ভারতে অবৈধভাবে বাস করছেন কতজন বাংলাদেশি?
২০১৪ সালে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জেসওয়াল দেশটির পার্লামেন্টে দাবি করেন যে, ১ কোটি ২০ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছে ভারতে। তিনি আরও দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামেই এই অবৈধ বাংলাদেশিদের বসবাস বেশি। কিন্তু দুই অঙ্গরাজ্যের সরকার এ মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। তোপের মুখে নিজের মন্তব্য প্রত্যাহার করেন জেসওয়াল। ২০১৬ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু পার্লামেন্টে বলেন, ‘হাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ২ কোটি অবৈধ অভিবাসী বর্তমানে ভারতে রয়েছে।’ তবে তিনি এই তথ্যের সূত্র উল্লেখ করেন নি। এরপর সরকারও স্বীকার করেছে যে, ভারতে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে সরকারের কাছে সঠিক তথ্য নেই।
২০১৫-২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতে নাগরিকত্ব বিষয়ক যেসব উপাত্ত আছে তা থেকেও প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে তেমন কিছু বোঝা যায় না। এই ৪ বছরে ১৫ হাজারের মতো বাংলাদেশিকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। তবে প্রায় ১৪৮৮০ বাংলাদেশিকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে কেবল ২০১৫ সালে। ওই বছর সীমান্ত সংলগ্ন ভূমি বিনিময়ে দুই দেশ সম্মত হওয়ার পর ওই বাংলাদেশিদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
ফলে প্রকৃত সংখ্যা না থাকায় ভারতের রাজনীতিকরা প্রায়ই দাবি করেন যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসীরা স্থানীয়দের চাকরি-বাকরি দখল করে ফেলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একবার বলেছিলেন, ‘গরিব মানুষের কাছে যে খাবার যাওয়ার কথা তা খেয়ে ফেলছে এরা (অবৈধ বাংলাদেশিরা)।’
বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটা ভালো করছে?
যদি জিডিপি দিয়ে তুলনা করা হয়, তাহলে সম্প্রতি ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো করছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ধারাবাহিক উন্নতি হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে বাংলাদেশ ভারতকে পেছনে ফেলেছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রাক্বলিত প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ শতাংশ, যেখানে ভারতের ৫.৩ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এমন উন্নতির কারণে ‘স্বল্পোন্নত দেশ’ বা এলডিসি থেকে বের হয়ে এসেছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছু উদ্বেগজনক নির্দেশকও রয়েছে। ২০১৮ সালের মুদ্রাস্ফীতি উপাত্ত অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ছিল সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের ৫.৮% মুদ্রাস্ফীতির তুলনায় ভারতের ছিল ৩.৪%। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের প্রাক্বলিত বেকারত্বের হারও ভারতের চেয়ে বেশি ছিল। তবে আন্তর্জাতিকভাবে দারিদ্র্য পরিমাপের মানদণ্ড অনুযায়ী, দৈনিক ১.৯ ডলারের কম আয় করা মানুষের সংখ্যা আনুপাতিক হারে বাংলাদেশে কম।
অন্যান্য মানদণ্ডে কেমন করেছে দুই দেশ?
বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। শিশুমৃত্যুর হার ও জন্মের সময় সম্ভাব্য আয়ুষ্কালের দিক থেকে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে ভালো করেছে। ভারতে ও পাকিস্তানে জন্ম নেয়া নবজাতকের তুলনায় বাংলাদেশে জন্ম নেয়া নবজাতকের ক্ষেত্রে নিজের পঞ্চম জন্মদিন দেখে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভারত (৬৮.৬ বছর) ও পাকিস্তানের (৬৬.৫ বছর) তুলনায় বাংলাদেশে (৭২.৫) ওই শিশুর সম্ভাব্য আয়ুষ্কালও বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হওয়া বৈশ্বিক লিঙ্গ বৈষম্য জরিপ ২০২০ অনুযায়ী, ভারতের অবস্থান ১০৮ থেকে পিছিয়ে ১১২তম। অপরদিকে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০তম। এছাড়া পার্লামেন্টে নারী প্রতিনিধিত্বের দিক থেকেও বাংলাদেশের (২২%) অবস্থান ভারতের (১৩%) চেয়ে ভালো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর