× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এমপি-মেয়র দ্বন্দ্ব / ময়লা আবর্জনায় ভাসছে মাইজদী শহর

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

এমপি ও মেয়র দ্বন্দ্বে জনদুর্ভোগ চরমে উঠার অভিযোগ উঠেছে। নোয়াখালী পৌরসভার আদলে মাইজদী শহর যত্রতত্র ময়লা আবর্জনায় ভাসছে। জানা গেছে, গত ২০শে ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে এমপি ও মেয়র প্রার্থী হলে ২ গ্রুপের রক্তারক্তি হামলা ও মামলায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা হয়। এর জের ধরে দুই মেরুর নেতাদের আর একই মঞ্চে না দেখার সূত্র ধরে এককের পর এক সমস্যার পাহাড় জমছে। নোয়াখালী জেলা শহরের যত্রতত্রভাবে গত ১৫ দিন ধরে ময়লা আবর্জনা পড়ে আছে। সড়কের দু’পাশে, বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, হাট বাজার ও অফিস আদালতের সামনে দিনের পর দিন পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধে চারপাশের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এনিয়ে জনদুর্ভোগের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাইজদী শহর আ‘লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর সভার মেয়র একে অপরকে দুষছেন। জানা যায়, গত ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে নোয়াখালী পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সড়কের পাশে, বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, হাট বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালতের সামনে থেকে ময়লা আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে না।
যত্রতত্র পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনার পঁচা দুগন্ধে শহরের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এতে একদিকে মশা মাছির উপদ্রব বাড়ছে, অন্যদিকে, পুরো শহরই যেন আবর্জনার-ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাসপাতালের রোগী, দর্শনার্থী, স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারী ও হাট বাজারের ক্রেতা বিক্রেতারা। নোয়াখালী পৌসভার বাসিন্দা ইলিয়াছ খন্দকার জানান, গত ১৫ দিন যাবত যেভাবে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা রাস্তার দু’পাশে ফেলে রাখার কারণে দুর্গন্ধে এলাকায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।

এর থেকে দ্রুত প্রতিকার চান তিনি। একই কথা বলেন নোয়াখালী পৌরসভার বাসিন্দা লুৎফুল হায়দার চৌধুরী। এ ব্যাপারে নোয়াখালী পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জানান, পৌর এলাকার আইউবপুরে দীর্ঘদিন থেকে শহরের ময়লা নিয়ে রাখা হয়ে আসছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে স্থানীয় লোকজনের বাধার কারণে আবর্জনার গাড়ি সেখানে যাচ্ছে না। এর আগে ময়লাবাহী গাড়ির চালকের ওপর স্থানীয় লোকজন হামলা চালায় বলেও অভিযোগ উঠে। আইউবপুরবাসীর আভিযোগ, ব্যস্ততম সড়কের পাশে খাল পাড়ে দিনের পর দিন পুরো পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে এলাকার মাটি, পানি ও বাতাস দূষিত হয়ে উঠেছে। যার কারণে লোকজন বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে ভুগছে। অতিষ্ঠ হয়ে সংসদ সদস্যকে জানিয়ে তারা নিজেরাই সেখানে পৌরসভার ময়লা আবর্জনার গাড়ি যেতে দিচ্ছে না। নোয়াখালী পৌরসভার মেডিকেল অফিসার প্রনয় কুমার দেব নাথ জানান, এভাবে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকলে বায়ু বাহিত রোগ বালাই বেড়ে যাবে। শ্বাসকষ্ট বাড়বে, ডায়রিয়ার জড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে হাসপাতাল বর্জ্য পড়ে থাকার কারণে এমন এমন রোগ দেখা দিতে পারে যার বিরুদ্ধে কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান না হলে পৌরবাসী বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাওযার আশংকা রয়েছে। এ ব্যপারে নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্লাহ খান সোহেল জানান, গত ১৭ বছর থেকে আইউবপুরে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ডাম্পিং করা হয়। কিন্তু কিছুদিন আগে সেখানে ময়লার গাড়ি গেলে স্থানীয় এমপির কথা বলে বাধা দেয় এবং পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদেরকে মারধর করে। যার কারণে সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পৌরসভার ময়লা আবর্জনা অপসারণ করা যাচ্ছে না। পৌর মেয়রের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে নোয়াখালী-৪ আসনেরে সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী জানান, চিকিৎসার জন্য তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। দেশে আসার পর জানতে পারলেন যেখানে ময়লা ফেলা হতো ওই এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে ডাম্পিংয়ে বাধা দেয়। এরপরও মেয়রকে আগামী দুতিন মাস সময় দেয়ার জন্য তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদেরকে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, আমি মেয়রকে অনুরোধ করবো তিনি নিজে সেখানে গিয়ে লোকজনকে বুঝিয়ে কয়েক মাস সময় নিয়ে নতুন ডাম্পিং স্টেশন না করা পর্যন্ত ময়লা ফেলার সুযোগটা যেন নেন। শুধু আশ্বাস নয়, ময়লা আবর্জনা ও দুর্গন্ধমুক্ত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংসদ সদস্য ও পৌর মেয়রের কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চান নোয়াখালী পৌরবাসী। এ নিয়ে এমপি ও মেয়রের মাঝে রাজনৈতিক স্নায়ুযুদ্ধে হাপিয়ে উঠছে আগামীর সিটি কর্পোরেশন এর নাগরিকরা।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর