× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সন্তানের সামান্য বিকলাঙ্গতা /দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকিতে বাংলাদেশি ডাক্তার দম্পতি

এক্সক্লুসিভ

মানবজমিন ডেস্ক
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেয়া ছেলে আদিয়ান বিন হাসানের সামান্য বিকলাঙ্গতার কারণে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে ডা. মেহেদি হাসান ভুঁইয়া ও ডা. রেবেকা সুলতানাকে। আগামী মাসে তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কথা। তারা অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে ৬ বছর বয়সী আদিয়ানের সামান্য ওই বিকলাঙ্গতার কারণে তাদেরকে সেই অনুমতি দেয়নি সরকার। ২০১৫ সালে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আদিয়ান অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসের জন্য স্বাস্থ্যগত যে ধারাগুলো অবশ্যই মানতে হয়, তা পূরণ করতে পারছে না। তাই তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।

আদিয়ানের জন্ম অস্ট্রেলিয়ায়।
কিন্তু জন্মের সময়ই সে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। তারপর থেকে সে সেরেব্রাল পালসি বা মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতে ভুগছে। তবে তা খুব অল্প পরিমাণে। এ কারণে সে ভারী জিনিস তুলতে বা বহন করতে পারে না। এ কারণে তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে রায় দেয় স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তাতে বলে দেয়া হয়, আদিয়ানকে থেরাপি দিতে হবে। এতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর একটি বোঝা এসে পড়বে বলে মনে করা হয়। এরপর তার পিতামাতা এডমিনিস্ট্রেটিভ আপিলস ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি তারা। তাতে বলে দেয়া হয়, তারা তাদের এই বাচ্চার স্বাস্থ্যগত সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন না। ফলে পরিবারটির এখন একমাত্র আশা হলো অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড কোলেম্যানের হস্তক্ষেপ। তিনি যদি হস্তক্ষেপ করে তাদেরকে অস্ট্রেলিয়ায় থাকার ব্যবস্থা না করে দেন তাহলে বাংলাদেশি ওই দম্পতির সামনে দু’সপ্তাহ সময় থাকবে সবকিছু গুছিয়ে নেয়ার জন্য। এ নিয়ে ড. ভুঁইয়া গিলং এডভারটাইজারকে বলেছেন, তার পরিবারটি এক নরক যন্ত্রণার মধ্যে আছে। দেশে ফেরত পাঠানোর সময় যতই ঘনিয়ে আসছে তিনি ততই কাজে মন বসাতে পারছেন না। তাদের অস্থায়ী ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২৪শে মার্চ পর্যন্ত। এ সময় পর্যন্ত তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবেন। তিনি আরো বলেছেন, মেডিকেল রিপোর্ট বলছে আদিয়ানের অবস্থা অনেকটা উন্নত হয়েছে। সে অন্য স্বাভাবিক বাচ্চাদের মতো সুস্থ হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশি এই দম্পতির বসবাস ভিক্টোরিয়ার গিলংয়ে। তারা বলেছেন, আদিয়ানের জন্য প্রয়োজন সীমিত আকারে ফিজিওথেরাপি এবং আনুষঙ্গিক কিছু সাহায্য। চেঞ্জ ডট অর্গ-এ তারা লিখেছেন, সে একা একা চলাফেরা করতে পারে। অন্য ৬ বছর বয়স্ক বাচ্চাদের মতো দৌড়াতে পারে, লাফাতে পারে, খেলতে পারে। চেঞ্জ ডট অর্গ-এ বিষয়ক পিটিশনে এখন পর্যন্ত স্বাক্ষর করেছে ২৬০০ মানুষ।
ডাক্তার ভুঁইয়া ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় যান। বিয়ে করেন ডাক্তার সুলতানাকে। তিনিও বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন ২০১২ সালে। ডাক্তার ভুঁইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক। তিনি বলেছেন, যদি তাদেরকে জোর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয় তাহলে তার ছেলে সামাজিক বৈষম্যের শিকার হবে। ডাক্তার মেহেদি ভুঁইয়াকে মেলবোর্নের ডেকিন ইউনিভার্সিটিতে একটি চাকরির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে তার স্ত্রী একটি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এতে সফল হলে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় একজন জিপি হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করবেন। এমন সময়ে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হলে পুরো স্বপ্ন ভেঙে যাবে। এমনকি পরিবারটি বিপন্ন হতে পারে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর