× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফুলবাড়ীর কৃষি জমিতে ৬ ইটভাটা

বাংলারজমিন

রবিউল ইসলাম বেলাল, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

 প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে বছরের পর বছর। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কৃষি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ছয়টি ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরে নামমাত্র আবেদন করে ছাড়পত্র ছাড়াই ইটভাটার মালিকরা আবাদি জমি ও জনবসতি এলাকাজুড়ে রাত-দিন ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মাত্র আধা কিলোমিটার এলাকার মধ্যে হচ্ছে তিনটি ইটভাটা। ইটভাটার বিষাক্ত ছাই, কালো ধোঁয়ায় ফলন হ্রাসের আশঙ্কায় পড়েছে কৃষকদের শতশত একর বোরো আবাদ, রবিশস্য, সুপারি, নারিকেল, আম-জামসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ইটভাটার পার্শ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। এমনকি বয়স্ক মানুষ।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের আজোয়াটারী গ্রামের বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে (মেসার্স ডব্লিউ এএইস ব্রিকস ফিল্ড), (এবি ব্রিকস), (মেসার্স এমএস এইচ ব্রিকস), বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবশ গ্রামের (মেসার্স এম এ ব্রিকস), ফুলবাড়ী ইউনিয়নের (কে এম ব্রিকস) ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের (জে জে এম ব্রিকস), নামের ছয়টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এ সকল ইটভাটার একটিরও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নাই। পরিবেশ অধিদপ্তরে নামমাত্র আবেদন করে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। ইটভাটার আয়তন দুই একরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার নিয়ম থাকলেও বিস্তৃত এলাকা দখলে নিয়েছে তারা। ভরাট করেছে পানি নিষ্কাশনের পথ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় সরকারি নিময়নীতির তোয়াক্কা করছে না। আজোয়াটারী গ্রামের কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম, মফিদুল ইসলাম জানান, ভাটার মালিকরা জমি ভাড়া নিয়ে ইট পোড়ানোর কাজ করছে। এসব ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় গত ৪-৫ বছর ধরে বোরো এবং আমন আবাদের ফলন বিঘা প্রতি ৬-৭ মণ ধান কমে এসেছে। ভাটার কালো ধোঁয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে সুপারি বাগানের। ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় কয়েক বছর থেকে এই এলাকায় সুপারি ধরছে না বললেই চলে। তাছাড়া আম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ বিভিন্ন ফলের ফলনও কমে গেছে। ভাটার মালিকরা ইট পরিবহনের জন্য উঁচু রাস্তা তৈরি ও ছোট সেতুর মুখ বন্ধ করায় বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর এই এলাকার শতশত বিঘা আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে নষ্ট হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মেসার্স ডব্লিউ এএইচ ব্রিকস ফিল্ডের মালিক মোশারফ হোসেন, মেসার্স এম এ ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী আলহাজ মো. আলতাফ হেসেন জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পুরাতন সনদ আছে, নতুন সনদের জন্য আবেদন করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে এবি ব্রিকসের মালিক খায়রুল আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কাগজ দেখাতে বাধ্য নন বলে সাংবাদিকদের জানান। উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবুর রশিদ জানান, জমির উপরিভাগের মাটি দিয়ে ইট তৈরি করার কারণে ওই এলাকার জমির উর্বরা শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে। এটা কৃষির জন্য মারাত্মক হুমকি। কুড়িগ্রাম জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, নথিপত্র দেখে যাদের কাগজপত্র নাই তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছাঃ সুলতানা পারভীন জানান, যাদের কাগজপত্র নাই তারা অবৈধ, শিগগিরই এ সকল অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর