ভারতে এসে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রা¤প। গুজরাটের মোতেরায় সর্দার পাটেল স্টেডিয়ামে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার সময় ওই বার্তা দেন ট্রাম্প। বলেন, পাকিস্তানকে সন্ত্রাস দমনে কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে। ভারতীয় উপমহাদেশে সন্ত্রাস দমনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করবে।
সোমবার সপরিবারে ভারতে এসে আহমেদাবাদে প্রথম বক্তৃতা দেন ট্রা¤প। সেখানেই ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে তোপ দাগেন তিনি। পাকিস্তানকে সাবধান করে তিনি বলেন, প্রতিটি দেশেরই অধিকার রয়েছে নিজেদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ নিয়ে একইরকম মতবিনিময় করে।
দুই দেশ একসঙ্গে সন্ত্রাস দমনে কাজ করবে। পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে, যাতে তারা সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো আপস না করে কড়া হাতে দমন করে।
নমস্তে ট্রা¤প অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের স¤পর্ক নিয়ে কথা বলেন। ভারতকে আখ্যায়িত করেন বন্ধু হিসেবে। একইসঙ্গে ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও। ঘোষণা দেন বড় সামরিক চুক্তির। তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এ সফরেই। বলেন, এ চুক্তির ফলে ভারতের প্রতিরক্ষা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ভারতের প্রধান প্রতিরক্ষা সহযোগী হয়ে উঠতে হবে।
বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদিকে বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করেন ট্রা¤প। বলেন, বন্ধু মোদিকে নিয়ে আমি গর্ব বোধ করি। পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে যে সব করা যায় সেটি করে দেখিয়েছেন মোদি। প্রতিদিন ভারতীয় জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। আগামী দশ বছরের মধ্যে ভারতের সব দারিদ্র্য দূর হবে। মোদির সময়ে এখানে ৭ কোটি বাড়ি তৈরি হয়েছে, বিপুল সংখ্যক মানুষ গ্যাস সংযোগ পেয়েছে। মানুষ ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মোদির নেতৃত্বে ভারতের সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে।
মোদির পর তিনি ভারতের প্রশংসা করেন। ভারতকে বৈচিত্র্যপূর্ণ রাষ্ট্র মনে করেন বলে জানান বক্তৃতায়। ট্রা¤প বলেন, ভারত বৈচিত্র্যের সমষ্টি। এটি সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র ও বিশ্বের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী দেশ। ভারতকে নিয়ে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। এদেশে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান একসঙ্গে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব সব সময়ই খুব ভালো। এখানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্টেডিয়ামে এসে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এরপর সামরিক প্রসঙ্গে চলে যান তিনি। বলেন, পাকিস্তানকে অবশ্যই তাদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাকিস্তানি জঙ্গি ঘাঁটিগুলো বন্ধ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ভারতকে সামরিকভাবে সাহায্য করে যাবে।
বক্তব্য শেষ করার আগে তিনি ভারতের সিনেমার প্রশংসা করে বলেন, এ দেশ থেকে প্রতি বছর অসংখ্য সিনেমা নির্মিত হচ্ছে। প্রতিভায় ভরা এই দেশ। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’র মতো সিনেমা তৈরি হয়েছে। এই দেশের ঐক্য ও সংহতি সারা বিশ্বের কাছে উদাহরণ। এরপর ‘গড ব্লেস ইন্ডিয়া, গড ব্লেস আমেরিকা’ বলে বক্তৃতা শেষ করেন ট্রা¤প।