× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিয়ানীবাজারে নাহিদ-পল্লব কাছাকাছি, দূরত্বে আতাউর

বাংলারজমিন

মিলাদ জয়নুল, বিয়ানীবাজার (সিলেট) থেকে
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার

সবাই হতবাক, কেউ উদ্বেলিত আবার কেউ আবেগপ্রবণ। ২১শে  ফেব্রুয়ারি দুপুরের পর থেকে একটি ছবি ভাইরাল। যে ছবি জানান দিচ্ছে বহুকথা। সব এখন অতীত, কেবল ছবি-ই বর্তমান। ২১শে ফেব্রুয়ারি সকালের সেই ছবি গত ক’দিন থেকে আলোচনার কেন্দ্রে, সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।
বর্ণমালা মিছিলের সেই ছবির প্রথম সারিতে গা-ঘেঁষে হাঁটছেন বিয়ানীবাজারের দুই শীর্ষ জনপ্রতিনিধি। এদের একজন নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি এবং অপরজন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব। স্থানীয় রাজনীতিতে যাদের যোজন দূরত্ব দুই দশকের বেশি সময় থেকে। এই দীর্ঘ সময়ে নাহিদ এমপি হয়েছেন তিনবার (মোট চারবার), পল্লব একা পথে হেঁটে একবার ভাইস চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
বিয়ানীবাজারে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কথা আলোচনায় উঠলেই নাম আসতো এই দু’জনের। ১৯৯৯ সালে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পর থেকে নাহিদ-পল্লবের রাজনীতির পথ হয়ে যায় বিপরীত। সূত্রমতে, সপ্তাহখানেক আগে উপজেলা প্রশাসনের একটি কক্ষে বসে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা একান্তে কথা বলেন চেয়ারম্যান পল্লব ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল। মূলত: সেই  বৈঠকের পর দূরত্ব গোচাতে সবুজ সংকেত আসে।
২০শে ফেব্রুয়ারি বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যান এমপি নাহিদ এবং চেয়ারম্যান পল্লব। নাহিদকে ঘিরে তখন দীর্ঘ জটলা। এর ফাঁকেও পল্লবকে দেখে ঈশারায় কাছে ডাকেন সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী। পল্লবও কাছে যান আবেগতাড়িত হয়ে। পরদিন বর্ণমালার মিছিলে কাছে-কাছে হাঁটা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে নাহিদ-পল্লবের চা-চক্র, আলোচনা সভা, পৌরসভার পুরস্কার বিতরণীতে যোগদান- এভাবেই দিন কাটে তাদের দু’জনার।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, এটা সরকারি কর্মসূচি ছিল। আর এসব কর্মসূচিতে যোগদান আমার দায়িত্ব। নুরুল ইসলাম নাহিদ সরকার দলীয় এমপি হিসেবে শহীদ দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। লাউতা ইউপি চেয়ারম্যান গৌছ উদ্দিন জানান, প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে সম্প্রীতির রাজনীতির সুযোগ এসেছে। এটাকে ধরে রাখা প্রয়োজন। এদিকে মিছিলে অনুপস্থিত ছিলেন আতাউর রহমান খান বা তার বলয়ের নেতাকর্মীরা। সবাই আছেন, তিনি কেন নেই-এ জিজ্ঞাসাও আছে সমালোচকদের। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তিনি সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি কিংবা জাতীয় কর্মসূচিতে খুব কম অনুপস্থিত থাকেন আতাউর খান। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী পল্লবের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধরাশায়ী হন আতাউর। সেই থেকে পল্লব-আতাউর মানসিক দূরত্ব শুধু বাড়ছে। আওয়ামী লীগের গত কাউন্সিলে এই দূরত্বের বলি হন আবদুল হাছিব মনিয়া। তিনিও বর্ণমালা মিছিলের আগের সারিতে ছিলেন।
আতাউর খানের অনুসারীদের দাবি, গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ অনেক নেতা পল্লবের পক্ষে কাজ করেন। যা তার পরাজয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আর উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে সেইসব নেতাদের সহ্য করতে পারেন না আতাউর। ঘরের শত্রুর কারণে নৌকা প্রতীক পেয়েও পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে তাকে। সেই থেকে দলীয় রাজনীতিতে ব্যাপক বাছবিচার আর নিজস্ব নেতাকর্মীদের সঙ্গী করে পথ চলছেন তিনি। আতাউর রহমান খান জানান, আমাকে ‘চিঠি দিয়ে’ দাওয়াত দেয়া হয়েছে। তবে বর্ণমালা মিছিলে ব্যক্তিগত কারণে উপস্থিত থাকতে পারিনি। রাজনীতি এমনই হয়। এখানে দূরত্ব-অভিমান বলতে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় দল। এখানে সবার মতো প্রকাশের সুযোগ রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হাছিব মনিয়া বলেন, বর্তমান সভাপতি সম্পাদকের উপর ক্ষুব্ধ। বিভিন্ন মাধ্যমে তার ক্ষোভ ভাঙানোর চেষ্টা করা হলেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলের প্রায় ৪ মাস পেরিয়ে গেছে। সভাপতি-সম্পাদকের দ্বিমতের কারণে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব আসন্ন কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন। আর নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য। তাকে ঘিরেই এখন সিলেট বিভাগের আওয়ামী রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর