সিরাজগঞ্জ সদরে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণ মামলার রায়ে ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই অর্থ দণ্ডিতদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে নির্যাতিত কিশোরীকে দেয়ার জন্য রায়ে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় প্রদান করেন ওই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল হামিদ লাভলু জানান।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সদর উপজেলার পাড়পাচিল গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে মো. রাসেল ওরফে রবিউল (২৫), একই গ্রামের সুলতানের ছেলে নাজমুল (২৪), নুরু ওরফে নুর ইসলাম (২৬), আলতাফ কসাইয়ের ছেলে মোমিন (৩৪) ও ভাটপিয়ারী গ্রামের ময়দান আলীর ছেলে সোহেল (২৬) এবং একই গ্রামের দানেজ আলীর ছেলে রাজ্জাক (৪৪)।

পিপি অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল হামিদ লাভলু মামলার বরাদ দিয়ে জানান, সদর উপজেলার ভাটপিয়ারী গ্রামের মৃত আবু সাঈদের ১৮ বছর বয়সী মেয়ে ও পাঁচিল গ্রামের রাসেলের সাথে মোবাইলে প্রেম হয়। ২০১৬ সালের ২০শে এপ্রিল রাতে ওই কিশোরীকে  বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যমুনা নদীর ভাটপিয়ার চরে যেতে বলে প্রেমিক রাসেল।  তার কথায় বিশ্বাস করে ভাটপিয়ারী যমুনার চরে যায় ওই কিশোরী। সেখানে যাবার পর রাসেল ও তার বন্ধুরা মিলে কিশোরীকে দলবেধেঁ ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই কিশোরী  জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে আখ ক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ধর্ষকেরা। ভোরে নির্যাতিত কিশোরী জ্ঞান ফিরে এলে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরার পথে মোমিন নামে আরেকজন তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এরপর নির্যাতিত কিশোরীর ফোন পেয়ে তার ভগ্নিপতি ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় নির্যাতিতার ভাই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাসুদেব সিনহা ৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৬ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডের রায় দেন বিচারক। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সোহেল ও আব্দুল মোমিন পলাতক রয়েছে।