× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জীবন বাজি রেখে ৬ মুসলিমের জীবন বাঁচিয়ে মৃত্যুমুখে প্রেমকান্ত

এক্সক্লুসিভ

মানবজমিন ডেস্ক
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার

দিল্লির অধিবাসীরা গত কয়েক দশকের মধ্যে শহরটির সব থেকে ভয়াবহ সামপ্রদায়িক দাঙ্গা দেখলেন। দাঙ্গায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৪ জন। আহত হয়েছেন আরো দুই শতাধিক। ফলে রাজধানীর একাংশে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে একে অপরের প্রতি বিরাজ করছে ঘোর অবিশ্বাস। একইসঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে এমন কিছু গল্পের যা প্রমাণ করে মানবতা এখনো টিকে আছে পৃথিবীতে। এমনই এক গল্পের স্রষ্টা প্রেমকান্ত বাঘেল। ইন্ডিয়া টাইমসসহ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে, কীভাবে নিজের জীবন বাজি রেখে ৬ জন মুসলিম প্রতিবেশীর জীবন বাঁচিয়েছেন প্রেমকান্ত। ঘটনার দিন দাঙ্গা চলাকালীন প্রেমকান্তের বাড়ির পাশে থাকা মুসলিম বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয় হিন্দুত্ববাদীরা।
প্রেমকান্ত যখন দেখলেন তার মুসলিম প্রতিবেশীদের বাড়িতে আগুন জ্বলছে তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে তাদেরকে সাহায্য করতে চলে যান। জীবন বাজি রেখে প্রতিবেশীদের উদ্ধার করতে থাকেন। আগুন জ্বলতে থাকা ঘরগুলো থেকে বের করে আনেন আটকে পড়া মানুষদের। তবে মুসলিম বন্ধুর বয়স্ক মাকে উদ্ধার করতে গিয়ে গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন প্রেমকান্ত। দগ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচিয়েছেন অন্তত ৬ জন মুসলিমের। তবে দগ্ধ হওয়ার পরেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি কেউ। সারারাত একইস্থানে থাকার পর পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা গুরুতর। শরীরের ৭০ শতাংশেরও বেশি পুড়ে গেছে। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। তবে তার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। প্রেমকান্ত সর্বশেষ জানিয়েছেন, তিনি তার বন্ধু ও তার প্রতিবেশীদের রক্ষা করতে পেরেছেন ভেবে তৃপ্তি অনুভব করছেন।

প্রেমকান্তের মতো এমন অনেকেই এগিয়ে এসেছেন দিল্লির দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাঁচাতে। মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছে দিল্লির শিখ সমপ্রদায়ও। হামলা থেকে নিরাপদ থাকতে যেসব মুসলিম ঘর ছেড়েছিলেন তাদের জন্য নিজেদের একটি প্রার্থনাস্থল গুরুদুয়ারার দরজা খুলে দিয়েছেন দিল্লির শিখরা। মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ভারতের রাজধানীর অশোকনগরের হিন্দুরাও। তারা ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মুসলিম পরিবারকে নিজেদের বাড়িতে সুরক্ষা দিয়ে রেখেছেন। দাঙ্গাকারীদের থামাতে নিজেরা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। ভ্রাতৃত্বের নজির  রেখেছেন মুসলিমরাও। বুধবার হিন্দুদের মন্দিরে হামলা হলে স্থানীয় অন্য মুসলিমরা হাতে হাত রেখে মানবশৃঙ্খল গড়ে তোলে। দাঙ্গাকারীদের হাত থেকে রক্ষা করে চাঁদবাগের একটি মন্দিরকে।

উল্লেখ্য, গত রোববার থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দ্রুতই এটি সামপ্রদায়িক দাঙ্গায় পরিণত হয়। এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ জন নিহত হয়েছেন এই দাঙ্গায়। এরমধ্যে শুধু বৃহসপতিবার নিহত হয়েছেন ৭ জন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর