× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তাবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রূপগঞ্জ রণক্ষেত্র মসজিদ ভাঙচুর, আহত ৩০

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, শুক্রবার

রূপগঞ্জে তাবলীগ জামাত নিয়ে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে তাবলীগের জুবায়ের ও সাদ গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সময় মারকাস নামে একটি মসজিদও ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। সংঘর্ষকালে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বুধবার রাতে উপজেলার তারাবো পৌরসভার বিশ্বরোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, তাবলীগ জামাতের দুটি ভিন্ন অনুসারী মাওলানা সাদ গ্রুপের সঙ্গে মাওলানা জোবায়ের গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের সংঘাত সংঘর্ষ বিদ্যমান রয়েছে।
রূপগঞ্জে তাবলীগের মাওলানা সাদ অনুসারীরা উপজেলার মুড়াপাড়া এলাকায় এবং মাওলানা জোবায়েরপন্থিরা তারাবো বিশ্বরোড এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। উপজেলার একমাত্র মারকাস মসজিদটি বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থিত ও  সাদ গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছিল। পাশেই জোবায়েরপন্থিদের নিয়ন্ত্রণাধীন জামিয়া কাওমিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা রয়েছে। তখন মারকাস মসজিদে জুবায়েরপন্থিরা নামাজ পড়া শুরু করলে সাদ অনুসারীরা বাধা দেন। এ কারণে তৎকালীন তারাবো পৌরসভার মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী মসজিদে সকলকে নামাজ পড়ার অনুমতি দেন। এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য পাশেই বাইতুল মামুর নামে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। গত দুই সপ্তাহ আগে জোবায়েরপন্থি আলেমরা মারকাস মসজিদে আবারো নামাজ পড়তে শুরু করেন। এ নিয়ে সাদপন্থিদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একারণে বুধবার রাতে কাকরাইল থেকে তাবলীগ জামাতের মুরব্বিরা আসেন বিরোধ নিষ্পত্তি করতে। স্থানীয় পর্যায়ে সাদপন্থিদের নেতৃত্ব দেন বাহাউদ্দিন হাজী, রফিকুল ও জহিরুল হাজী এবং জোবায়েরপন্থিদের নেতৃত্ব দেন মাওলানা কাইয়ুম, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যরা। রাত ৯টার দিকে আলোচনা উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে একপক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন।

একপর্যায়ে সাদপন্থিরা বিশ্বরোড  এলাকার জমিয়া কওমিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় হামলা চালায়। সংঘর্ষে মহিউদ্দিন, ওমর ফারুক, শাহীন মিয়া, আরিফুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, জাকির হোসেন, মোশারফ হোসেন, নূরে আলম, তারেক মিয়া, আলামিন, আব্দুল আউয়াল, আবু ইউসূফ, আজিম উদ্দিন, সোলেইমান, আলামিন মিয়া, ইব্রাহিম, তারেক, মাসুদ আহমেদ, হোসাইফাসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। সংঘর্ষ চলাকালীন সময় একপক্ষ মারকাস মসজিদে হামলা ও ভাঙচুর করেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। হামলাকারী উভয়পক্ষ বিশ্বরোড এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হামলার সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় পুলিশ দুইপক্ষকে ধাওয়া দিয়ে ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহামুদুল হাসান বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। পুলিশ গিয়ে দুই গ্রুপের সদস্যদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপাতত বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া অবধি মসজিদে কোনো পক্ষই দখল নিতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে দু’পক্ষের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দুই পক্ষই একে অপরকে ঘটনার জন্য দোষারোপ করছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর