× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টিকটকে পোস্ট প্রতি ৮ কোটি টাকা পেতে পারেন ভাইরাল তারকারা!

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০, শুক্রবার, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

একসময় কিশোর-কিশোরীরা নভোচারী, ফুটবল তারকা বা পপ গায়ক/গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু সময় পাল্টেছে। ক্যারিয়ারের লক্ষ্যও পাল্টেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০০ সালের পর যাদের জন্ম ও ১৩-৩৮ বছর বয়স যাদের, তাদের অর্ধেকেরও বেশি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তারকা হতে চায়। আর বেশিরভাগই নিজের মেধাকে ব্যবহার করে অর্থ আয়ের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নিতে চান চাইনিজ ভাইরাল ভিডিও অ্যাপ টিকটক। এমনটাই উঠে এসেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মর্নিং কনসাল্টের গবেষণায়। এ খবর দিয়েছে গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, কিশোর-কিশোরীরা মনে করেন, যে কারও বিনোদন দেওয়ার ক্ষমতাকেই পুরষ্কৃত করে টিকটক। কিন্তু ইন্সটাগ্রাম বা ইউটিউব পুরষ্কৃত করে তাদের, যারা ইতিমধ্যেই তারকা হিসেবে স্বীকৃত।
গবেষণায় উঠে এসেছে যে, ভাগ্যবান শীর্ষ কয়েকজন অবশ্য টিকটক তারকা হয়েই আয় করবেন কাড়ি কাড়ি অর্থ। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলেন, টিকটকে সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকারা এখন বিভিন্ন ব্রান্ডের সঙ্গে একজোট হয়ে প্রতি পোস্টের জন্য সর্বোচ্চ ২ লাখ ডলার বা ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। যুক্তরাজ্যের গেম কোম্পানি অনলাইন ক্যাসিনোর গবেষকরা বলেন, টিকটক জনপ্রিয়তার দিক থেকে এত দ্রুত আগাচ্ছে যে, আগামী বছরই হয়তো কোনো কোনো টিকটক তারকা পোস্ট প্রতি বিজ্ঞাপনের জন্য ১০ লাখ ডলার বা প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা আয় করতে পারেন! বর্তমানে টিকটকের সবচেয়ে বাজারি তারকা বলেন লরেন গ্রে। ১৭ বছর বয়সী গ্রে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভেনিয়ায় বসবাস করেন। তিনি প্রতি পোস্টের জন্য প্রায় ২ লাখ ডলার দাবি করে থাকেন বলে গবেষকরা অনুমান করছেন। টিকটকে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ অনুসারী আছে গ্রের। টিকটকে ১৫ থেকে ৬০ সেকেন্ডের ভিডিও আপলোড করা হয়। গ্রে ইতিমধ্যে এই অ্যাপে নিজের জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে ভার্জিন রেকর্ড ও ক্যাপিটল রেকর্ডসের মতো জনপ্রিয় সঙ্গীত সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছেন। তিনি প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু আপলোড করেন। তার পোস্টে মোট লাইক পড়েছে ২০০ কোটিরও বেশি।
শীর্ষ বিশে আছেন লস-অ্যাঞ্জেলস ভিত্তিক এক কুকুর। জিফপম নামে ওই কুকুরের রয়েছে ২ কোটি অনুসারী। ইন্সটাগ্রামে রয়েছে ১ কোটি অনুসারী। এই কুকুরের মালিক প্রতি পোস্টে আয় করতে পারেন ১ লাখ ডলার করে!
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরের মধ্যেই ভারতের ১৯ বছর বয়সী অভিনেত্রী আশিকা ভাটিয়া হবেন টিকটকের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা। তার থাকবে ১৯ কোটি অনুসারী। বর্তমানে তার রয়েছে দেড় কোটি অনুসারী। তবে তার অনুসারী বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। বলিউডের এই অভিনেত্রী বিভিন্ন ক্লাসিক ভিডিওর সঙ্গে ঠোঁট মেলান ও মজা করে ভিডিও বানান। এ থেকেই বোঝা যায় যে, টিকটকের সহজিকতাই এর জনপ্রিয়তার রহস্য। কারণ, সহজেই বানানো যায় এসব ভিডিও। কিন্তু ঠোঁট মেলানো ও কৌতুক অন্য ভাষার মানুষও অনেক সময় বুঝতে পারে। এ কারণেই কোনো সীমান্তের মধ্যে আটকে নেই টিকটক তারকাদের জনপ্রিয়তা। অনলাইন ক্যাসিনোস অনুমান করছে, জনপ্রিয় টিকটক তারকারা প্রতিটি বিজ্ঞাপনী পোস্টের জন্য তাদের অনুসারী প্রতি ০.০০৫ ডলার বা ৪২ পয়সা করে চাইতে পারেন। এর ফলে ভাটিয়ার মতো তারকারা যখন ১৯ কোটি অনুসারী পাবেন, তারা প্রতিটি পোস্টের জন্য প্রায় ১০ লাখ ডলার বা সাড়ে ৮ কোটি টাকা দাবি করবেন।
জাপানের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাসায়োসি সন ২০১৮ সালে এই অ্যাপে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। তখন টিকটকের দর উঠেছিল ৭৫ বিলিয়ন ডলার বা ৬ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা! টিকটক দাবি করে, তাদের ৮০ কোটি সক্রিয় গ্রাহক রয়েছে। সেই অনুযায়ী, টুইটার ও স্ন্যাপচ্যাটের সম্মিলিত ব্যবহারকারীর চেয়েও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে টিকটকের। তবে ফেসবুকের চেয়ে এই দিক থেকে পিছিয়ে টিকটক। এর আগে অবৈধভাবে শিশুদের তথ্য সংগ্রহের দায়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ অ্যাপটিকে ৫৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে। এছাড়া চীনা সরকারকে বিব্রত করতে পারে এমন ভিডিও সেন্সর করার কারণেও সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল অ্যাপটিকে। স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিষ্ঠাতা ইভান স্পাইগেল বলেন, তিনি টিকটকের বড় ভক্ত। তার ধারণা, টিকটক শিগগিরই ফেসবুকের মালিকানাধীন ইন্সটাগ্রামকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৮ সালে ইন্সটাগ্রাম বলেছিল, তাদের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ খুব হয়তো পেছনে নেই টিকটক।
যতই জনপ্রিয়তা থাকুক, তারপরও একটি পোস্টের জন্য টিকটক তারকাকে ১০ লাখ ডলার বা সাড়ে ৮ কোটি টাকা দেওয়াটা অনেকের কাছেই অত্যুক্তি মনে হতে পারে। কিন্তু আরেক বৃটিশ মার্কেটিং এজেন্সি ডিজিটাস ইউকের কৌশলবিদ জেমস হোয়াটলি মনে করেন, এমনটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তিনি বলেন, এ থেকে বোঝা যায় যে, ব্রান্ডগুলো ক্রমেই টিভি বা বিলবোর্ড বিজ্ঞাপনের মতো গতানুগতিক মাধ্যম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। হাত মেলাচ্ছে ‘প্রকৃত তারকা’দের সঙ্গে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর