× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পশ্চিমবঙ্গে মহামারি আইন জারি, বন্ধ সিনেমা হল, ধর্মস্থানে বিধিনিষেধ আরোপ

ভারত

কলকাতা প্রতিনিধি
(৪ বছর আগে) মার্চ ১৬, ২০২০, সোমবার, ৮:১৯ পূর্বাহ্ন

ভারতে প্রতিদিনই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এদিন পর্যন্ত ১১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে সোমবার পর্যন্ত কারও শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সন্ধান সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবুও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে মহামারি আইন জারি করেছেন। এর আগে ভারতের আরও ১২টি রাজ্যে এই মহামারি আইন জারি করা হয়েছে। রাজ্যে করোনারভাইরাস প্রতিরোধের জন্য ২০০ কোটি টাকার তহবিলও গঠন করা হয়েছে। রাজ্য সচিবালয় নবান্নে এক পর্যালোচনা বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্যই মহামারি আইন জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার সকালে আইসোলেশনে থাকা ১০ জন উত্তর ২৪ পরগণার জেলা প্রশাসককে যেভাবে বিরক্ত করেছেন এবং চিকিৎসা না করিয়ে চলে যেতে চেয়েছেন, তার পর এই আইন জারি করতে বাধ্য হয়েছি।
সেইসঙ্গে এদিন তিনি আরও বেশকিছু বিধিনিষেধের কথা ঘোষণা করেছেন। রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সময়সীমা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গত শনিবার রাজ্য সরকার ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। ঠিক একইভাবে রাজ্যের সমস্ত সিনেমা হল, প্রেক্ষাগৃহ, অডিটোরিয়াম ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি আতঙ্কিত না হতে, কিন্তু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবেই এইসব ব্যবস্থা নিচ্ছি। তার মতে, এখনও রাজ্যে ছড়ায়নি বলে আমরা অসতর্ক হতে পারি না। করোনাভাইরাসের জেরে আপাতত রাজ্যে পুরসভার ভোট হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারও সোমবার থেকে অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগেই রাজ্যেও সব মিউজিয়াম ও জাতীয় যাদুঘর দর্শনাথীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের ধর্মস্থানগুলিতেও সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।
ধর্মস্থানেও সতর্কতা
মন্দির চত্বরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন (বেলুড় মঠ) ও দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ। সোমবার থেকে বেলুড় মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে বসে ধ্যান-সন্ধ্যারতি দেখা, প্রসাদ বিতরণ এবং প্রেসিডেন্ট মহারাজকে প্রণাম, দর্শন এবং মন্ত্রদীক্ষা প্রদান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রীরামকৃষ্ণ মিশনের অতিথি নিবাসও বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দক্ষিণেশ্বরে মন্দির দর্শনের সময় কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। একসঙ্গে ৮-১০ জনের বেশি দর্শনার্থী পুজো দেওয়ার জায়গায় থাকতে পারবেন না। দর্শনার্থীদের মধ্যে অন্তত এক হাত দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে। কলকাতার কালীঘাট মন্দিরে অবশ্য এদিন পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি । তবে দর্শনার্থীদের লাইনে যাতে দূরত্ব বজায় থাকে সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। করোনা-আতঙ্কের জেরে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ধর্ম মহামেলা বন্ধ রাখার জন্য রবিবার পুলিশ-প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয়েরা। আগামী ২১ মার্চ ওই মেলা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ভক্তদের সতর্ক করছে তারাপীঠ মন্দির কর্তৃপক্ষও। মন্দিরের আশপাশে জমায়েত এড়ানোর জন্য নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। তবে মুসলিম ধর্মস্থানগুলিতে বড় ধরণের কোনও বিধিনিষেধ এখনও পর্যন্ত আরোপ করা হয়নি। তবে রোগ হয়েছেন এমন ব্যাক্তিদের ঘরে বসেই নামাজ নিতে বলা হয়েছে।
‘গৃহ-পর্যবেক্ষণ’-এ সাড়ে পাঁচ হাজার
সতর্কতা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে অনেককেই ‘গৃহ-পর্যবেক্ষণ’-এ রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে রবিবার পর্যন্ত গৃহ-পর্যবেক্ষণে ছিলেন ৩ হাজার ৬৫৭ জন। কিন্তু সোমবার দুপুরের মধ্যেই সেই সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছুঁয়েছে। সুত্রের আরও খবর, করোনা-আক্রান্ত দেশ থেকে আসা মোট ৫ হাজার ৮৫৬ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের পর্যবেক্ষণেও রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৪৬ জনকে সম্পূর্ণ বিপন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ৫ হাজার ৫৯৮ জনকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে করোনা-সন্দেহে মোট ৬৯ জন ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালেরই পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
পুরভোটও স্থগিত রাখা হয়েছে
করোনাভাইরাসের জেরে আপাতত রাজ্যে পুরসভা গুলির ভোট হচ্ছে না। সোমবার সর্বদল বৈঠকের পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়েছে, কমিশনের সমস্তু প্রস্তুুতি সম্পন্ন। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতির জেরে এবং রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলির সুপারিশের ভিত্তিতে আপাতত পুরসভার ভোট হচ্ছে না। ১৫ দিন পর আবার বৈঠকে বসে পরিস্থিতি আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর